দুদকের জবাবদিহি ও কার্যকর সংস্কারের প্রস্তাব
দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) একটি সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে জবাবদিহি করতে হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, দুদক যদি নিরপেক্ষতা হারায় এবং মুখ দেখে অনুসন্ধান বা তদন্ত করে, তাহলে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়ে যায়। সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এই বিষয়গুলো উল্লেখ থাকবে।
সংস্কার কমিশনের কাজ ও সুপারিশ
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দুদক সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে। এতে দুদককে শক্তিশালী, স্বচ্ছ এবং কার্যকর করতে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ও সুপারিশ রাখা হবে। প্রতিবেদনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হয়েছে:
- নিয়োগ প্রক্রিয়া:
দুদকের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নিয়োগে স্বচ্ছতা আনার প্রস্তাব থাকবে। পাঁচ সদস্যের কমিশন করার প্রস্তাব দেওয়া হবে। নিয়োগে যারা বাছাই করবেন, তাদের যোগ্যতা, প্রক্রিয়া এবং পদ্ধতি নিয়ে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন দেওয়া হবে। - জবাবদিহি:
দুদককে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। কার কাছে এবং কীভাবে এই জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে, তা প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকবে। - সাংগঠনিক সমস্যা দূরীকরণ:
দুদকের অভ্যন্তরে আমলাতান্ত্রিক প্রভাব, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলো দূর করার সুপারিশ করা হবে। - আইন সংশোধন:
সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট, কর আইন এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনসহ যেসব আইন দুদকের কাজকে বাধাগ্রস্ত করছে, সেগুলোর সংশোধনের প্রস্তাব রাখা হবে। - দুর্নীতি প্রতিরোধ:
দুর্নীতি প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের সচেতনতা এবং আইনগত দায়িত্ব আরও কার্যকর করার কথা বলা হবে।
চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদককে আদর্শ ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি। তিনি সতর্ক করে বলেন, “সীমাহীন স্বাধীনতা অপব্যবহার হয়ে ক্ষমতার বাইরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। এ জন্য জবাবদিহি অপরিহার্য।
দুদককে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে সংস্কার কমিশনের এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিবর্তন ছাড়া বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।