লেবাননে হস্তক্ষেপ করবে না সিরিয়া: জুলানি
সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতা আহমেদ আল-সারা জুলানি লেবাননের সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানিয়ে কোনো নেতিবাচক হস্তক্ষেপ করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রোববার লেবাননের দ্রুজ সম্প্রদায়ের নেতা ওয়ালিদ এবং তৈমুর জুম্বালতের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন।
আহমেদ আল-সারা জুলানির বক্তব্য
জুলানি, যিনি হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন, লেবাননের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি লেবাননের সার্বভৌমত্ব এবং দ্রুজ সম্প্রদায়ের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।
আসাদের শাসন পতন ও বিদ্রোহী দখল
ডিসেম্বরের শুরুর দিকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএস সিরিয়ার শিয়া মুসলিম আলওয়াইতে সম্প্রদায়ের প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনকে পতন ঘটায়। আসাদের শাসনামলে আলওয়াইতে সম্প্রদায়ের সদস্যরা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। তবে আসাদের পতনের পর তাদের মধ্যে প্রতিশোধমূলক হামলার শঙ্কা তৈরি হয়।
বিদ্রোহীদের আশ্বাস
বাশার আল-আসাদের পতনের পর জুলানি নিশ্চিত করেছেন যে, তারা সংখ্যালঘু কোনো সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালাবেন না। এ বিষয়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠী রাজধানী দামেস্কের পশ্চিমাঞ্চলে থাকা আলওয়াইতে সম্প্রদায়সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে।
আসাদের দেশত্যাগ
৮ ডিসেম্বর, বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্ক ঘিরে ফেললে বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, বিদ্রোহীদের এগিয়ে আসার সময় আসাদের একটি ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি চুপিসারে রাশিয়ার বিমানে করে মস্কো চলে যান। পালানোর আগে নিজের নিরাপত্তারক্ষী ও ভাই মাহের আল-আসাদকেও কিছু জানাননি। মাহের পরে মরুভূমি হয়ে ইরাক পালিয়ে যান।
সেনাবাহিনীর ভাঙন
বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রার সময় আসাদের সেনাবাহিনীর অনেক সদস্য সামরিক পোশাক ছেড়ে সাধারণ পোশাকে পালিয়ে যান। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের স্টাফরা আসাদের পালানোর বিষয়টি শেষ মুহূর্তে জানতে পেরে সেখান থেকে দ্রুত সরে যান।
এক কর্মকর্তার অভিযোগ
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আসাদ আমাদের সঙ্গে বেইমানি করেছেন।’ এই মন্তব্য আসাদের শাসনামলের অবনতি এবং তার নেতৃত্বের প্রতি সেনাবাহিনী ও কর্মকর্তাদের আস্থাহীনতা প্রকাশ করে।
সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি এবং জুলানির নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের নতুন অঙ্গীকার দেশটির ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। লেবাননের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জুলানির প্রতিশ্রুতি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্রোহীদের সহানুভূতিশীল মনোভাব এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে ইতিবাচক বার্তা দিতে পারে।