December 23, 2024
বছরখানেক সময় পেলে সংস্কার কাজগুলো করে যাব: আসিফ নজরুল

বছরখানেক সময় পেলে সংস্কার কাজগুলো করে যাব: আসিফ নজরুল

ডিসে ২৩, ২০২৪

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল একটি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের মধ্যে দেশে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক এবং বিচার বিভাগীয় সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর মতে, এসব সংস্কারের মাধ্যমে দেশের প্রশাসনিক কাঠামোকে আরও কার্যকর এবং স্বচ্ছ করা সম্ভব হবে। সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ আয়োজিত এক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।

সংস্কার প্রস্তাব ও ঐকমত্য

ড. আসিফ নজরুল জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং সংস্কার কমিশনের প্রধান সংস্কার বাস্তবায়নে মৌখিকভাবে সম্মতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই সংস্কারগুলো কার্যকর হলে ভবিষ্যতে কোনো রাজনৈতিক সরকার সহজে তা বদলাতে বা বাতিল করতে পারবে না। এ কারণে জাতীয় ঐকমত্যকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি অভিহিত করেন।

বিচার বিভাগের ক্ষমতা ও স্বৈরাচারী ব্যবহার

তিনি অভিযোগ করেন, দেশের উচ্চতর বিচার বিভাগকে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতায় রাখার এবং তাদের কর্তৃত্ব সুসংহত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এ সময় তিনি বলেন, অনেক মানুষ দোষী প্রমাণিত না হয়েও দীর্ঘ সময় আটক ছিলেন এবং তাদের জামিন আবেদন প্রায়শই প্রত্যাখ্যান করা হতো।

নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও স্বচ্ছ শাসনব্যবস্থা

ড. আসিফ নজরুলের মতে, যদি প্রতি পাঁচ বছর পরপর সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো এবং নির্বাচিত দল সরকার গঠন করত, তাহলে বিচার বিভাগকে ক্ষমতাসীন দলের স্বৈরাচারী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব হতো না। তিনি উল্লেখ করেন, বিচার বিভাগীয় নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্পষ্ট ছিল, যা বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নষ্ট করেছে।

উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া

তিনি জানান, উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার জন্য তিনটি সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। এই প্রস্তাবগুলোর মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার চেষ্টা করা হবে।

বিশ্লেষণ

১. সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা: দেশের বিচার বিভাগ এবং প্রশাসনিক কাঠামোকে স্বচ্ছ ও কার্যকর করার জন্য ড. আসিফ নজরুলের প্রস্তাবিত সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২. জাতীয় ঐকমত্যের ভূমিকা: সংস্কারের সাফল্যের জন্য জাতীয় ঐকমত্য একটি অপরিহার্য শর্ত। এটি নিশ্চিত হলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সরকার সহজে এই সংস্কারগুলো পরিবর্তন করতে পারবে না।

৩. বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা: উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার প্রস্তাব বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশে সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং নাগরিক অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।

Leave a Reply