ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে জুবায়ের ও সাদপন্থিদের সংঘর্ষ, নিহত ৩
বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে মাওলানা জুবায়ের আহমেদ ও মাওলানা সাদ কান্ধলভি অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত এবং প্রায় শতাধিক আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে।
নিহতদের পরিচয়
১. বাচ্চু মিয়া (৭০): কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের বাসিন্দা।
২. বেলাল (৬০): ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকার বাসিন্দা।
৩. অপর এক ব্যক্তির নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
সংঘর্ষের বিবরণ
স্থানীয়দের তথ্যমতে, রাত ৩টার দিকে সাদপন্থিরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন পথ দিয়ে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় ময়দানের ভেতরে থাকা জুবায়েরপন্থিরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সাদপন্থিরাও আক্রমণ চালায়। একপর্যায়ে সাদপন্থিরা ময়দানে প্রবেশ করলে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়, যা হতাহতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সাদপন্থিদের বক্তব্য
সাদপন্থিদের প্রভাবশালী মুরুব্বি মুয়াজ বিন নূর এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেন,
“আমরা এখন ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণে আছি। জুবায়েরপন্থিদের আক্রমণে আমাদের তিন ভাই শহিদ হয়েছেন। ময়দানে অনেক জুবায়েরপন্থি চাকু ও ছোড়াসহ আটক হয়েছে।”
সাদপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক মোহাম্মদ সায়েম সকাল সাড়ে ৮টায় জানান,
“বর্তমানে সংঘর্ষ বন্ধ রয়েছে। তিনজন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। জুবায়েরপন্থির লোকজন ময়দানে আটক রয়েছে। সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হয়েছে।”
জুবায়েরপন্থিদের বক্তব্য
জুবায়েরপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ বলেন,
“আমাদের দুইজন সাথী মারা গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ভেতরে আরও অনেকে নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক।”
পুলিশের বক্তব্য
টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি ইসকান্দার হাবিবুর রহমান বলেন,
“ময়দানের পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত। ময়দান সাদপন্থিদের দখলে রয়েছে।”
হতাহতদের চিকিৎসা
হতাহতদের টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিনিয়র ব্রাদার হাফিজুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন,
“এ পর্যন্ত তিনজন নিহত হয়েছেন এবং অসংখ্য আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
এই সংঘর্ষের ফলে বিশ্ব ইজতেমার পরিবেশে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, এবং স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর রয়েছে।