December 22, 2024
বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল, শ্রদ্ধায় স্মরণ

বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল, শ্রদ্ধায় স্মরণ

ডিসে ১৪, ২০২৪

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: বাঙালি জাতির শোক ও শ্রদ্ধার দিন

আজ ১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এই দিনটি বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে এক মর্মান্তিক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে, যখন বাঙালি চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে দেশের সেরা মেধাবীদের।

ভোর থেকেই মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাধারণ মানুষের ঢল নামে। ব্যানার, ফেস্টুন হাতে বিভিন্ন সংগঠন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা স্মৃতিসৌধে উপস্থিত হন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর তিন বাহিনীর গার্ড অব অনার এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে শহীদ পরিবারের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সর্বস্তরের জনগণ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অনেকেই শহীদদের কবরে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন এবং ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করেন।

বুদ্ধিজীবী নিধনের নির্মম ইতিহাস

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরের এই দিনটি বাঙালির ইতিহাসে ঘৃণ্য ও মর্মস্পর্শী। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী মিলে দেশের শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।

১০ ডিসেম্বর থেকেই বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞ শুরু হয়। ঘাতকরা রাতের আঁধারে তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যায়। মিরপুর ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে তাদের ওপর চালায় অমানুষিক নির্যাতন। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ ছিল, কেউ ছিলেন বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত।

বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে, ১৪ ডিসেম্বর রাতে ঢাকায় প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে রায়েরবাজার ও মিরপুরের ডোবা-নালায় পড়ে থাকা লাশগুলো দেখে দেশবাসী শিউরে ওঠে।

বুদ্ধিজীবীদের অবদান

বাঙালি জাতির স্বাধীনতার পথে এই বুদ্ধিজীবীরা তাদের মেধা, মনন ও সাহসিকতার মাধ্যমে জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। তাদের লেখনী ও কর্মকাণ্ডে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু এই ভূমিকার কারণেই তারা ঘাতকদের টার্গেটে পরিণত হন।

বুদ্ধিজীবী দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা সেসব সূর্যসন্তানের। জাতি চিরকাল তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে এবং তাদের আত্মত্যাগের কথা মনে রাখবে।

Leave a Reply