ভারতে ভেঙে দেওয়া হলো উত্তরপ্রদেশে ২০০ বছরের পুরনো মসজিদের
ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে প্রায় ২০০ বছরের পুরনো নূরী জামে মসজিদের একাংশ ভেঙে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার রাতের এই ঘটনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।
প্রশাসনের দাবি
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফতেহপুর জেলায় অবস্থিত নূরী জামে মসজিদের ওই অংশটি বান্দা-বাহরাইচ হাইওয়ের সম্প্রসারণের পথে অবৈধভাবে তৈরি হয়েছিল। প্রশাসন জানিয়েছে, মসজিদ কমিটিকে আগেই নোটিশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা মসজিদের ওই অংশ সরায়নি। তাই গণপূর্ত বিভাগ (পিডব্লিউডি) নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর মসজিদের অংশটি ভেঙে ফেলে।
পিডব্লিউডি দাবি করেছে, গত ১৭ আগস্ট মসজিদের কমিটিকে “অবৈধ নির্মাণ” সরানোর জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অবিনাশ ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, ভেঙে দেওয়া অংশটি মূল মসজিদের নয়, বরং তিন বছর আগে নির্মিত হয়েছিল।
মসজিদ কমিটির অবস্থান
মসজিদ কমিটি জানিয়েছে, তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করছিল। এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন জমা হলেও শুনানির আগে প্রশাসন বুলডোজার ব্যবহার করে মসজিদের অংশটি ভেঙে দেয়।
বিচারবিভাগীয় নির্দেশনা লঙ্ঘন?
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আগেই বুলডোজার দিয়ে কোনো স্থাপনা ভাঙার ক্ষেত্রে বিচারবিভাগীয় অনুমতির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিল। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বুলডোজার-জাস্টিস নিয়ে শীর্ষ আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে আদালতের রায় উপেক্ষা করে প্রশাসন বুলডোজার ব্যবহার চালিয়ে যাচ্ছে।
বিপরীত প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। মসজিদের দীর্ঘ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব থাকায় অনেকেই এই পদক্ষেপকে সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে দেখছেন। পাশাপাশি, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের তড়িঘড়ি পদক্ষেপে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এই ঘটনা শুধু মসজিদ কমিটির জন্য নয়, বরং ভারতের সামগ্রিক বিচারব্যবস্থা ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য একটি স্পর্শকাতর ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আদালতের রায়কে উপেক্ষা করে বুলডোজার-জাস্টিস চালু রাখার কারণে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।