সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগের পথ খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র
সিরিয়ার বিদ্রোহীদের বিজয় এবং প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতি মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। বিদ্রোহী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা মাত্র ১২ দিনে দামেস্ক দখল করেছে। বিদ্রোহীদের রাজধানীতে প্রবেশের পর বাশার আল-আসাদ পালিয়ে যান। শোনা যাচ্ছে, তিনি রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন।
বিদ্রোহীদের সাফল্য
- বিদ্রোহী দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে আসাদ সরকারবিরোধী সংগ্রাম করে আসছিল।
- হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এর নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা সিরিয়ার রাজধানী দখল করতে সক্ষম হয়।
- আসাদের পতনের ফলে রাশিয়া ও ইরানের সিরিয়ার ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন সিরিয়ার নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের উপায় খুঁজছে।
- মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর: মুখপাত্র ম্যাথু মিলার জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের সক্ষমতা রয়েছে।
- অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের আলোচনা: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত চার দিনে দুবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এইচটিএস এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
- এইচটিএস একসময় আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল এবং যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ একে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল।
- তবে আসাদের পতনের পর পশ্চিমা এবং আরব দেশগুলো এইচটিএসের সঙ্গে যোগাযোগের উদ্যোগ নিচ্ছে।
- সংগঠনটির নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যোগাযোগ করতে পারে কিনা, এ বিষয়ে মুখপাত্র ম্যাথু মিলার কোনো মন্তব্য করেননি, তবে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি।
তুরস্কের ভূমিকা
- সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তুরস্কের সেনারা বিদ্রোহীদের, বিশেষ করে সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এসএনএ) কে সহায়তা দিচ্ছে।
- যদিও তুরস্ক এখনও এইচটিএসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
আসাদ পরিবারের শাসন ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছে। ২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ বিদ্রোহী ও আসাদ বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে রূপ নেয়। আসাদের পতন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে এবং রাশিয়া ও ইরানের আঞ্চলিক প্রভাবকে সীমিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আসাদের ক্ষমতাচ্যুতি আধুনিক মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে। বিদ্রোহীদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর যোগাযোগ সিরিয়ার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।