সব নিয়ে নেবে আর আমরা বসে বসে ললিপপ খাব, এটা ভাবার কারণ নেই: মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য:
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বিধানসভায় বাংলাদেশ ও ভারতের চলমান উত্তেজনা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, “বাংলা, বিহার ও ওডিশা সব নিয়ে নেবে আর আমরা ললিপপ খাব, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।”
উত্তেজনার প্রেক্ষাপট
সম্প্রতি ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চট্টগ্রাম নিয়ে মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে কেউ কেউ বলেছেন, “চট্টগ্রাম যদি নিয়ে নেওয়া হয়, তবে অবিভক্ত বাংলা— বাংলা, বিহার এবং ওডিশাও আমরা নিয়ে নেব।”
এই প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, “কেউ কেউ বলছে, বিহার দখল করব, ওডিশা দখল করব। আমি বলি ভাই, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। এমন হিম্মত কারও নেই যে বাংলা, বিহার, ওডিশা নিয়ে যাবে আর আমরা চুপচাপ বসে থাকব।”
দাঙ্গা ও সংখ্যালঘু প্রসঙ্গ
মমতা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে বলেন, “দাঙ্গা কখনো হিন্দু-মুসলমান, শিখ বা খ্রিস্টান করে না। এটা করে কিছু সমাজবিরোধী।” তিনি সবাইকে এমন মন্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান, যা উত্তেজনা তৈরি করতে পারে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রসঙ্গ
মমতা ভারতীয়দের ধৈর্যশীল বলে উল্লেখ করে বলেন, “এটা আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে শিখেছি—আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে।”
পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকের দিকেও নজর
মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা ভারতের পররাষ্ট্রনীতি মেনে চলব।”
শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়া
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী মমতার মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, “বাংলাদেশ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গে জনরোষ তৈরি হয়েছে। মমতা মুখ বাঁচানোর জন্য এসব বলছেন। তাঁর মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী সরাসরি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সমর্থন করছেন এবং নরেন্দ্র মোদির নিন্দা করছেন।”
বিতর্কিত শান্তি সেনা প্রস্তাব
এর আগে, ২ ডিসেম্বর বিধানসভায় মমতা কেন্দ্রীয় সরকারকে রাষ্ট্রপুঞ্জের (জাতিসংঘ) কাছে বাংলাদেশে শান্তি সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিতে বলেন। এই বক্তব্য বাংলাদেশ ও ভারতে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়।
মমতার বক্তব্য এবং এর প্রেক্ষাপট দুই দেশের চলমান উত্তেজনা আরও গভীরভাবে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। উভয় পক্ষই সংলাপের মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের আশা করছে।