আ’লীগ নেতাদের সঙ্গে আসামি ছাত্র শিক্ষক-কৃষকও
২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর খুলনার তেরখাদা উপজেলার মোকামপুর বাজারে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলালের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ছয় বছর পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৪ নভেম্বর উপজেলা বিএনপির সদস্য আজিজুল হাকিম ২০৫ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন। তবে মামলা ঘিরে অনিয়ম, নিরীহ ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্তি, এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে।
মামলার তথ্য ও অভিযোগ
- মামলায় বিভিন্ন পেশার মানুষ, যেমন ছাত্র, স্কুলশিক্ষক, কৃষকসহ অনেককে আসামি করা হয়েছে।
- আসামিদের মধ্যে অনেকের নাম যুক্ত করার পেছনে ব্যক্তিগত শত্রুতার অভিযোগ উঠেছে।
- মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য অ্যাফিডেভিট ও চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে।
আসামিদের বক্তব্য
- বায়েজিদ শেখ (৭৬ নম্বর আসামি) বলেছেন, ২০১৮ সালে ঘটনার সময় তিনি ঢাকায় হোস্টেলে ছিলেন এবং তার বয়স ছিল ১৬। মামলায় তার বয়স দেখানো হয়েছে ৩০ বছর।
- রিমা খাতুন (৯০ নম্বর আসামি), একজন স্কুলশিক্ষিকা, বলেন যে গ্রাম্য শত্রুতার কারণে তার নাম মামলায় যুক্ত করা হয়েছে।
- মকিদ শেখ (৯৭ নম্বর আসামি) দাবি করেন, জমি নিয়ে বিরোধের কারণে তার নাম এসেছে।
বিএনপির অবস্থান
মামলার বাদী আজিজুল হাকিম বলেন, এটি রাজনৈতিক মামলা। তিনি আরও জানান, নিরীহ ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য কিছু নাম অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হয়েছে, তবে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।
তেরখাদা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী ফখরুল ইসলাম বুলু বলেন, মামলার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে বাদীকে জবাবদিহি করতে হবে।
তদন্ত ও তদন্ত কমিটি
মামলার ঘটনায় সমালোচনা তৈরি হলে কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলালের নির্দেশে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান আবুল কালাম আজাদ লস্কর জানান, তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে নিষেধ করা হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
এ মামলায় আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতাদের নাম বাদ পড়লেও তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও তার স্ত্রীর নাম রয়েছে।
তেরখাদার মামলাটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগের পাশাপাশি অনিয়ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগে বিতর্কিত হয়ে উঠেছে। বিএনপির তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও প্রশাসনিক উদ্যোগের মাধ্যমে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান আশু প্রয়োজন।