আওয়ামী লীগের শাসনামলে অর্থপাচার নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ, শ্বেতপত্র প্রকাশের ঘোষণা বিএনপির
বিএনপি অভিযোগ করেছে, আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে প্রায় ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছে। এই অর্থপাচার প্রতিরোধ ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজন। দলের পক্ষ থেকে অর্থ পাচারসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি নিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কাজে কয়েকজন নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক
সোমবার রাতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য সিনিয়র নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
ভারতের কার্যক্রমের সমালোচনা
বৈঠকে ভারতের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
- চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে ভারতের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডকে কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত বলে উল্লেখ করেন বিএনপির নেতারা।
- আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ভারত সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন তারা।
- দলীয় নেতারা দাবি করেন, আওয়ামী লীগের ইন্ধনে এসব ঘটনা ঘটছে। ভারতের কর্মকাণ্ডকে উস্কানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পরিকল্পনা হিসেবে অভিহিত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলন ও ডকুমেন্টারি প্রকাশের সিদ্ধান্ত
ভারতের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বিএনপি শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করবে। সেখানে ভারতের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ ও তথ্যসমৃদ্ধ একটি ডকুমেন্টারি প্রকাশ করা হবে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় নিয়ে মন্তব্য
বিএনপির নেতারা বৈঠকে বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা ছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ। রায়ের মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয়েছে। তাদের ভাষ্যমতে, শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে সরানোর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ মামলা করেছিলেন।
বিজয় দিবস উদ্যাপন
বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকায় বড় পরিসরে কনসার্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দেশীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে এই অনুষ্ঠানটি বিজয় দিবস উদ্যাপনে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে দলের নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দ
বৈঠকে অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা, যেমন:
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাফিজ উদ্দিন আহমদ এবং ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে। একই সঙ্গে অর্থপাচার, ভারতের ভূমিকা এবং ২১ আগস্ট মামলাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ইস্যুতে অবস্থান পরিষ্কার করেছে দলটি।