ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিতে উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে ই–মেইল পাঠাচ্ছে, যাতে তাঁরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন। আগামী বছরের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার সময় অভিবাসীদের গণবিতাড়নের প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে এ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সতর্কতা ও পরামর্শ
- ভ্রমণ সতর্কতা:
ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটি, এমআইটি, ওয়েসলিয়ান ইউনিভার্সিটি সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগেই যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার পরামর্শ দিয়েছে। - অতীত অভিজ্ঞতা:
২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রশাসন কয়েকটি মুসলিমপ্রধান দেশ, উত্তর কোরিয়া এবং ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঝুঁকি এড়াতে এই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে।
অভিবাসন নীতির প্রভাব
- আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ:
যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত চার লাখের বেশি অনথিভুক্ত শিক্ষার্থী ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন। - ভিসার সীমাবদ্ধতা:
ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে শিক্ষার্থীদের ভিসা সীমিত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা শঙ্কা করছেন, তাঁদের ভিসা নবায়ন বা শিক্ষাগ্রহণ চালিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হতে পারে। - ডিএসিএ নীতির শঙ্কা:
বারাক ওবামার ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস (ডিএসিএ) নীতি সুরক্ষিত পাঁচ লাখ অভিবাসী শিক্ষার্থীও নতুন নীতিমালায় নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
কলোরাডো ডেনভার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ক্লো ইস্ট বলেন, “আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা অভিবাসন নীতির অনিশ্চয়তার কারণে চরম উদ্বেগে আছেন। ভিসার মেয়াদ এবং শিক্ষার সুযোগ নিয়ে তাঁরা আতঙ্কিত।”
চীনের শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন, যা তাঁদের শিক্ষাগত ভবিষ্যৎকেও প্রভাবিত করতে পারে।
ছাত্রছাত্রীদের অভিমত
ইন্ডিয়ানার আর্লহাম কলেজের জাপানি শিক্ষার্থী আওই মায়েদা বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন কঠোর নীতি গ্রহণ করতে পারে, যা আমাদের শিক্ষাজীবনে বিপর্যয় ডেকে আনবে।” তাঁর মতে, “আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা সমস্যা সৃষ্টি হলে আমাদের বিতাড়ন আরও সহজ হয়ে যাবে।”
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির সম্ভাব্য কঠোরতার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও শিক্ষার্থীদের অনিশ্চয়তা কাটেনি। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা এবং তাদের পরিবারগুলো নীতিগত স্থিতিশীলতার জন্য অপেক্ষা করছেন।