December 23, 2024
ঢাকার বিভিন্ন সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবস্থান, চলাচল ব্যাহত

ঢাকার বিভিন্ন সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবস্থান, চলাচল ব্যাহত

নভে ২৪, ২০২৪

ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের আন্দোলন ও সড়ক অবরোধ নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি দেশের পরিবহন খাতে একটি তীব্র সংকট সৃষ্টি করেছে। রিকশাচালকরা বিভিন্ন দাবিতে, বিশেষত হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহারের জন্য আন্দোলন করছেন, যা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি করেছে এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

আন্দোলনের মূল দাবী:

গত ১৯ নভেম্বর, হাইকোর্ট ঢাকা মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এই আদেশের ফলে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধ হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা রিকশাচালকদের কাছে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করবে। এর প্রতিবাদে, রিকশাচালকরা ১১ দফা দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন। তাদের মূল দাবী হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহার করা এবং ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল অব্যাহত রাখা।

আন্দোলনের স্থানে উপস্থিতি:

ঢাকার মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ী, জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে রিকশাচালকরা সড়ক অবরোধ করেছেন। আন্দোলনকারীরা পিকআপ ভ্যানে লাল ব্যানার নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন এবং স্লোগান দিয়ে নিজেদের দাবি জানান। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রধান সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে রিকশাচালকরা আদালতের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য রাখেন।

পরিবহন ব্যবস্থা ও যানজট:

সড়ক অবরোধের কারণে রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর, গাবতলী, পল্টন, প্রেস ক্লাব এবং যাত্রাবাড়ী এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়, যা চলাচলকারী সাধারণ মানুষের জন্য বিরাট ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছে।

হাইকোর্টের আদেশ:

হাইকোর্টের আদেশের প্রেক্ষিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেটি প্যাডেলচালিত রিকশা সমিতির রিটের ভিত্তিতে করা হয়েছে। আদালত বলেছে যে, ঢাকা মহানগরীতে তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। এর ফলে, রিকশাচালকরা তাদের পেশার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং এই আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা:

এ আন্দোলনের মধ্যেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। তবে, সড়ক অবরোধের কারণে যানজট ও ভোগান্তি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের হাইকোর্টের আদেশ এবং তার বিরুদ্ধে রিকশাচালকদের প্রতিবাদ দেশের পরিবহন খাতে একটি নতুন দৃষ্টিকোণ এনে দিয়েছে। এটি কেবল পরিবহন সংকটের ইস্যু নয়, বরং শ্রমিকদের আয়ের সুযোগ এবং পেশাগত অধিকার নিয়ে একটি বড় প্রশ্ন তুলছে। আন্দোলন এবং প্রতিবাদের কারণে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে এর মাধ্যমে শ্রমিকদের দাবির প্রতি সংবেদনশীলতা তৈরি হতে পারে, বিশেষ করে যদি সরকারের পক্ষ থেকে একটি সমাধান বের করা হয় যা শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করতে সহায়তা করবে।

Leave a Reply