বিশাল জয় পাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী
কেরলের ওয়েনাড় বিধানসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতে চলেছেন, এবং এর মাধ্যমে তিনি নির্বাচনী রাজনীতিতে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছেন। ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর প্রিয়াঙ্কা পাঁচ লাখ ভোটের ব্যবধান পেরিয়ে যান, যা তার জয় নিশ্চিত করে।
এটি প্রিয়াঙ্কার প্রথম নির্বাচনী লড়াই হলেও, তাঁর জন্য রাজনৈতিকভাবে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়ে আসলেও, আগে কখনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। ২৩ অক্টোবর কেরলের ওয়েনাড় লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার মাধ্যমে তিনি রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন।
এ নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল সিপিআইয়ের সাবেক বিধায়ক এবং রাজ্য সহ-সম্পাদক সত্যন মোকেরি এবং বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নব্যা হরিদাসের সঙ্গে। নব্যা হরিদাস যদিও কোঝিকোড় পৌরসভার নির্বাচনে দু’বার জয়ী হয়েছেন, তবে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর বিপুল জনপ্রিয়তা তাকে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এগিয়ে রেখেছে। এর আগেও, ওয়েনাড়ে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রিয়াঙ্কার ভাই, রাহুল গান্ধী, সাফল্য দেখিয়েছিলেন এবং এই আসনটি তিনি ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন।
ওয়েনাড়ে প্রিয়াঙ্কার জয় একটি বড় রাজনৈতিক বার্তা বহন করে। একদিকে, এটি কংগ্রেসের জন্য একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক অবস্থান নিশ্চিত করে, অন্যদিকে, এটি প্রিয়াঙ্কার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য একটি শক্ত ভিত্তি স্থাপন করেছে। নির্বাচনের আগে, রাহুল গান্ধী এই আসনটি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন, এবং তিনি জানিয়ে দেন যে, তার বোন প্রিয়াঙ্কা এই আসনে উপনির্বাচনে লড়বেন। এর পরেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রিয়াঙ্কার নাম ঘোষণা করা হয়।
প্রিয়াঙ্কার নির্বাচনী প্রচারের বিশেষ দিক ছিল তাঁর সরাসরি জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ। ২৩ অক্টোবর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে প্রিয়াঙ্কা একটি রোড শো করেন, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। এই প্রচারণা তাকে স্থানীয় জনগণের সমর্থন জেতাতে সহায়তা করেছে, এবং শেষ পর্যন্ত তার জয় প্রমাণ করে যে, কংগ্রেসের নতুন প্রজন্মের নেতাদের প্রতি জনগণের আস্থা ক্রমেই বাড়ছে।
এছাড়া, এই নির্বাচনে প্রিয়াঙ্কার পাশাপাশি রাহুল গান্ধীর প্রচারেরও প্রভাব ছিল। রাহুল যখন ওয়েনাড় ও রায়বরেলী থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তখন প্রিয়াঙ্কা তার প্রচারে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন, যা কংগ্রেসের জয়কে আরও সুদৃঢ় করেছিল। এখন, প্রিয়াঙ্কা নিজেই এই আসনে নির্বাচিত হয়ে কংগ্রেসের ভিতরে নতুন নেতৃত্বের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে যাচ্ছেন।
এককথায়, ওয়েনাড়ের উপনির্বাচন কংগ্রেসের জন্য একটি বড় রাজনৈতিক জয়, যা দলের নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বের অগ্রগতিকে চিহ্নিত করে এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর রাজনৈতিক ভবিষ্যতের পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।