যে কারণে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে নেই সাকিবের নাম
সাকিব আল হাসানের র্যাঙ্কিংয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য এবং তার পরবর্তী পতনের বিশ্লেষণ একটি গভীর ও বহুমাত্রিক প্রেক্ষাপটে ঘটেছে। দীর্ঘদিন ধরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে শীর্ষস্থানটি সাকিবের কাছে ছিল, কিন্তু বর্তমানে তার নাম র্যাঙ্কিং থেকে প্রায় অদৃশ্য হয়ে গেছে, যা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি বড় শূন্যতা তৈরি করেছে। সাকিবের র্যাঙ্কিং থেকে হঠাৎ করে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার কারণগুলো ভিন্ন ভিন্ন—নিষেধাজ্ঞা, অবসর, এবং দীর্ঘ সময় ধরে খেলায় অনুপস্থিতি—এগুলো একত্রে তার র্যাঙ্কিংয়ের পতনকে প্রভাবিত করেছে।
১. নিষেধাজ্ঞা (২০১৯)
২০১৯ সালে সাকিব আল হাসান জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করার জন্য আইসিসি থেকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা পান, যার মধ্যে এক বছর স্থগিত ছিল। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে তার নাম র্যাঙ্কিং তালিকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। যদিও এরপর সাকিবের ক্যারিয়ারে আর কোন বিতর্কিত পরিস্থিতি হয়নি, তবুও এই সময়কালে তিনি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান থেকে ঝরে পড়েছিলেন।
২. অবসর
২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর সাকিব টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। এর ফলে ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার নাম স্বাভাবিকভাবেই র্যাঙ্কিং থেকে সরানো হয়েছে। ক্রিকেট বিশ্বে তার অবসরের সিদ্ধান্তটি একটি যুগের সমাপ্তি এবং তার আগের ধারাবাহিকতার চূড়ান্ত অবসান হিসেবে দেখা হচ্ছে।
৩. দীর্ঘ অনুপস্থিতি
ওয়ানডে র্যাঙ্কিং থেকে সাকিবের নাম সরানোর আরেকটি প্রধান কারণ হলো তার দীর্ঘ সময় ধরে অনুপস্থিতি। ২০২৩ সালের নভেম্বরের পর থেকে তিনি ওয়ানডে ক্রিকেটে আর খেলেননি। আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের নিয়ম অনুযায়ী, ৯ থেকে ১২ মাসের মধ্যে কোনো খেলোয়াড় যদি আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলে, তবে তাকে র্যাঙ্কিং থেকে বাদ দেওয়া হয়। সাকিবের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে, কারণ তার পরে আর কোন ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হয়নি।
৪. টেস্ট ফরম্যাটে অবস্থান
তবে সাকিবের জন্য সুখবর হচ্ছে, তিনি এখনও টেস্ট ক্রিকেটে আইসিসির র্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান করছেন। সর্বশেষ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে তিনি ভারত সফরে টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নেন, তবে তার পরবর্তী সময়ে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ কিংবা সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও তিনি ছিলেন না।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের শূন্যতা
সাকিব আল হাসান একসময়ের অলরাউন্ডার হিসেবে বিশ্বব্যাপী একটি আইকনিক নাম ছিল। তার র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান বাংলাদেশ ক্রিকেটের গর্ব ছিল। তবে বর্তমানে তার অনুপস্থিতি বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি বড় শূন্যতা তৈরি করেছে, যা অন্য কোনো খেলোয়াড় পূর্ণ করতে পারবে কিনা, তা সময়ই বলবে। তবুও, সাকিবের ক্রিকেটে দেয়া অবদান এবং তার দীর্ঘ প্রভাব, তা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে চিরকাল অমর হয়ে থাকবে।
এছাড়া, সাকিবের র্যাঙ্কিংয়ে পতনের পাশাপাশি, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সামগ্রিক উন্নতি এবং আগামী দিনে তার শূন্যস্থান পূরণের জন্য সম্ভাব্য অলরাউন্ডারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়বে।