December 23, 2024
এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

নভে ২১, ২০২৪

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে দীর্ঘ এক যুগ পর সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ বিকেল সাড়ে ৩টায় গুলশানের বাসা থেকে সেনাকুঞ্জের উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি। এটি ২০১৮ সালের পর তার প্রথম প্রকাশ্য কর্মসূচি, কারণ সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সিলেট সফর করেছিলেন খালেদা জিয়া। বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

১. খালেদা জিয়ার সশস্ত্র বাহিনী দিবসে অংশগ্রহণ:

  • অংশগ্রহণের তাৎপর্য: ২০১২ সালে খালেদা জিয়া সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সেনাকুঞ্জে গিয়েছিলেন, তবে পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি উপস্থিত থাকেননি। ২০১৩ সালে আমন্ত্রণ পেলেও তিনি অনুষ্ঠানে যাননি। তখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। এরপর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে বিএনপি নেতাদের আমন্ত্রণ বন্ধ হয়ে যায়, তবে এবার ২০২৪ সালে তা পুনরায় শুরু হয়েছে।
  • একযুগ পর আগমন: খালেদা জিয়ার সেনাকুঞ্জে উপস্থিতি এই বছরের একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষত দীর্ঘ একযুগ পর তার এই অংশগ্রহণ।

২. তারেক রহমানেরও আমন্ত্রণ:

  • ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এটি বিএনপির জন্য একটি বড় রাজনৈতিক পদক্ষেপ, কারণ এর আগে দীর্ঘ সময় ধরে দলের নেতা-নেত্রীরা এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি।
  • আমন্ত্রিত ২৬ জন নেতা: খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানসহ মোট ২৬ জন বিএনপি নেতা এই বছর আমন্ত্রণ পেয়েছেন। এতে দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক সামরিক কর্মকর্তারাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। এটি বিএনপির মধ্যে এক নতুন স্বীকৃতির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

৩. সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি:

  • সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এটি বিএনপির নেতাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যেখানে তারা সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলিত হবেন।

৪. আমন্ত্রণ পত্র বিতরণ:

  • গত মঙ্গলবার রাতে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লে. জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল এ এস এম কামরুল আহসান বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন।
  • আমন্ত্রণপত্র ২৬ জন বিএনপি নেতা-নেত্রীর নামে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পৌঁছানো হয়, যার মধ্যে তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

৫. রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:

  • খালেদা জিয়ার এই অংশগ্রহণ এবং বিএনপি নেতাদের আমন্ত্রণ সশস্ত্র বাহিনী দিবসে একটি নতুন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সম্পর্কের একটি সূচনা হতে পারে। এটি রাজনৈতিক দৃশ্যপটে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে পারে, যেখানে সরকারের সঙ্গে বিরোধী দলের সম্পর্কের স্বাভাবিকতা এবং সমন্বয়ের সম্ভাবনা বাড়বে।

খালেদা জিয়ার সশস্ত্র বাহিনী দিবসে অংশগ্রহণ ও বিএনপির নেতাদের আমন্ত্রণ পুনরায় শুরু হওয়া একটি রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এটি বিশেষত ২০১৮ সালের পর তার প্রথম প্রকাশ্য উপস্থিতি এবং দলের মধ্যে নতুন এক ঐক্যের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে। ২৬ জন বিএনপি নেতার আমন্ত্রণ এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতি এই অনুষ্ঠানে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

Leave a Reply