December 23, 2024
ইমরান খানের ‘শেষ ডাক’ আন্দোলন: ২৪ নভেম্বর পাকিস্তানে গণবিক্ষোভের প্রস্তুতি

ইমরান খানের ‘শেষ ডাক’ আন্দোলন: ২৪ নভেম্বর পাকিস্তানে গণবিক্ষোভের প্রস্তুতি

নভে ১৯, ২০২৪

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আগামী ২৪ নভেম্বর দেশব্যাপী গণ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। তিনি এই আন্দোলনকে ‘শেষ ডাক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন, যা তার রাজনৈতিক সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিয়ে এসেছে।

তবে, ইমরানের ‘শেষ ডাক’ ঘোষণার পরই পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে দুই মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এর ফলে, ইসলামাবাদে জনসমাবেশ এবং জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা সরাসরি ইমরান খানের পরিকল্পিত আন্দোলনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।

১. ইমরান খানের অভিযোগ:

ইমরান খান তার আইনজীবীদের মাধ্যমে একটি লিখিত বার্তায় বলেছেন, শেহবাজ শরীফ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি এই আন্দোলন শুরু করছেন। ইমরান দাবি করেছেন যে, বর্তমান সরকার জনগণের ম্যান্ডেট চুরি করেছে এবং নির্বিচারে সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি আরো বলেছেন, সরকারের ২৬তম সংশোধনী সংবিধানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যা তার বিরুদ্ধে একেবারেই অগণতান্ত্রিক।

২. আন্দোলনের উদ্দেশ্য:

ইমরান খান জানিয়েছেন যে, তার এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিবাদসংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে আনা। তার মতে, বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় আসা এবং তার অপসারণের পর যেভাবে গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে, সেটি জনগণের মৌলিক অধিকারকে লঙ্ঘন করেছে।

৩. ১৪৪ ধারা:

ইমরান খানের আন্দোলন ঘোষণার পর পাকিস্তানের ইসলামাবাদ প্রশাসন দুই মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এই ধারা অনুযায়ী, ইসলামাবাদে কোনো ধরনের জনসমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা ইমরান খানের গণবিক্ষোভ পরিকল্পনার জন্য একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। ১৪৪ ধারা সাধারণত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সন্ত্রাসের আশঙ্কা থাকার সময় প্রয়োগ করা হয়।

৪. ইমরান খানের রাজনৈতিক অবস্থান:

ইমরান খানের এই আন্দোলন পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি নতুন টার্ন নিয়ে এসেছে। তার পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) দল দীর্ঘদিন ধরে শেহবাজ শরীফ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে এবং তার দাবিগুলো হচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন, সংবিধান লঙ্ঘন, এবং জনগণের অধিকার সلب। ইমরান খানের এই আন্দোলনকে অনেকেই পাকিস্তানের ভবিষ্যত রাজনৈতিক পরিস্থিতি নির্ধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।

৫. রাজনৈতিক উত্তেজনা:

পাকিস্তানে এই ধরনের গণআন্দোলন সাধারণত রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি করে, বিশেষ করে যখন দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল—পিটিআই এবং পিএমএল-এন—একটি বিপরীত অবস্থানে থাকে। ইমরান খান এবং তার সমর্থকরা মনে করেন, শেহবাজ শরীফ সরকারের ক্ষমতায় থাকার পেছনে বিকল্প ধারা এবং স্বৈরাচারী উপাদান রয়েছে, যা পাকিস্তানের গণতন্ত্রকে বিপথগামী করছে।

৬. আইনগত পদক্ষেপ:

ইমরান খানের আন্দোলন প্রসঙ্গে, তার আইনজীবীরা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন যে, সরকারের দমনমূলক পদক্ষেপ এর বিরুদ্ধে তারা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তারা দাবি করেছেন, সরকার আন্দোলনকারীদের গণতান্ত্রিক অধিকার নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে।

ইমরান খানের ‘শেষ ডাক’ আন্দোলন পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে। যদিও ইসলামাবাদ প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে, তবুও তার সমর্থকরা আগামী ২৪ নভেম্বর তাকে সমর্থন জানাতে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাকিস্তানের ভবিষ্যত রাজনৈতিক অগ্রগতি ও এই আন্দোলনের সফলতা নির্ভর করবে দেশের সাধারণ জনগণের প্রতিক্রিয়া এবং সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া পদক্ষেপের ওপর।

Leave a Reply