নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা করেছে, আর থামবে না: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু হয়ে গেছে এবং তা আর থামবে না। তবে, এই ট্রেন শেষ স্টেশনে পৌঁছাতে অনেক কাজ বাকি রয়েছে, যা রাজনৈতিক দলের ঐক্যমত্যের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।”
ড. ইউনূস আরও বলেন, “নির্বাচন কবে হবে, এ প্রশ্ন আমাদের সবার মনেই আছে এবং এটি আমাদেরও সারাক্ষণ মাথায় থাকে। নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছি। কিছুদিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে যাবে, এরপর তাদের দায়িত্ব হবে নির্বাচনের সব কার্যক্রম পরিচালনা করা।”
তিনি বলেন, “প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন, এই বিষয়ে সরকার কাজ করছে। এছাড়া, নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার পাশাপাশি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করবে, যা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।”
ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, “এটি আমাদের সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার, রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সংস্কার করা। ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে, যারা ইতোমধ্যে তাদের কাজের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও এসব কমিশনের কার্যক্রম সম্প্রচারিত হচ্ছে, তাই আমি সকলকে অনুরোধ করছি এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে অংশগ্রহণ করতে এবং তাদের মতামত জানাতে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি সবাইকে আহ্বান জানাই, আপনারা আপনার মতামত খোলাখুলিভাবে জানাতে থাকুন। সংস্কারের কথা বলুন, কারণ সংস্কার হল জাতির দীর্ঘমেয়াদি শক্তি। তা না হলে তরুণ প্রজন্মকে আমরা সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারব না।”
ড. ইউনূস আরও বলেন, “নির্বাচনী সংস্কারের জন্য সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা অনুসরণ করা হবে। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও দেশের জনগণের মতামত গুরুত্বপূর্ণ। এই সুপারিশগুলোর ভিত্তিতে নির্বাচনী আইন সংশোধন করা হবে, এবং সমান্তরালভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে।”
তিনি তার ভাষণ শেষে বলেন, “আমি নিশ্চিত নই, সংস্কার প্রস্তাবগুলো কতটা বাস্তবায়িত হবে, তবে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমরা প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে আপনার কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন আয়োজন করব। এর জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন, এবং আমি আপনাদের কাছে ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানাই।”
ড. ইউনূস আশা প্রকাশ করেন যে, নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর হবে এবং তার পরই নির্বাচনের রোডম্যাপ সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।