দাবা ফেডারেশনের কাছে ১৮ হাজার ইউরো পায় ফিদে
বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন সম্প্রতি বেশ কিছু আর্থিক সমস্যায় পড়েছে, যার ফলে বিশ্ব দাবা সংস্থা ফিডে (FIDE)-এর কাছে ফেডারেশনের পাওনা পরিশোধে গড়িমসি হয়েছে। বিশেষ করে, ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ফেডের কোনো পাওনা পরিশোধ করা হয়নি, যার ফলে ফেডারেশনের দেনার পরিমাণ ১৮ হাজার ইউরো হয়ে গেছে। এই সমস্যাটি গভীরভাবে সমালোচিত হয়েছে, কারণ দাবা ফেডারেশনের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ থাকার পরেও তা সঠিকভাবে ব্যয় করা হয়নি।
আর্থিক সংকট ও বাজেট ব্যবস্থাপনা:
ফেডারেশন সূত্রে জানা গেছে, ফেডে’র অর্থ পরিশোধ না করার ফলে এই দেনার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ১৮ হাজার ইউরো হয়েছে। ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ফিডের কাছে কোনো টাকা পরিশোধ করা হয়নি, যার ফলে এই দেনার বোঝা নতুন কমিটিকে বহন করতে হবে। এই অবস্থায়, বিডিএসএফ (বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন)-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এবং বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন যে ফান্ড ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ব্যাপক অদক্ষতা ছিল, ফলে বর্তমান কর্তৃপক্ষকে মাইনাস অবস্থান থেকে শুরু করতে হচ্ছে।
বেনজীর আহমেদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি:
ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তবে গত কয়েক বছর ধরে নানা কারণে তিনি দাবা ফেডারেশনের কার্যক্রম থেকে দূরে ছিলেন। সাবেক এক কর্মকর্তার মতে, বেনজীর আহমেদ না থাকাটা এই আর্থিক সংকটের মূল কারণ। ফেডারেশন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং অর্থের সঠিক ব্যবহার না হওয়ার ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নতুন কমিটির দায়িত্ব:
নতুন অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, যেখানে ফিদে মাস্টার ড. তৈয়বুর রহমান সুমন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। সুমন জানিয়েছেন, ফেডারেশনকে এখন অর্থ ব্যবস্থাপনায় নতুন করে শুরু করতে হবে। তাঁর মতে, অর্থের স্বচ্ছ ব্যবহারের মাধ্যমে ফেডারেশনের কার্যক্রম পুনর্গঠন করতে হবে এবং ফিডে’র বকেয়া পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
আগের খারাপ ব্যবস্থাপনা:
এছাড়া, সুমন আরো জানিয়েছেন যে, আগের কমিটি ফেডারেশনে আসা অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করেনি। তিন-চার বছর আগে অনেক অর্থ ফেডারেশনে এসেছে, কিন্তু তা সঠিকভাবে ব্যবহার না করায় বর্তমানে ফেডারেশনকে এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নতুন কমিটি এই অর্থকে সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে দাবা খেলার উন্নয়নে বিনিয়োগ করবে বলে তিনি আশাবাদী।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
সুমন আরো বলেন, তার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে ফান্ড ম্যানেজমেন্ট। তিনি জানেন কিভাবে দাবা খেলার উন্নয়ন করতে হয়, তবে অর্থের যথাযথ ব্যবহারে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। ফেডারেশনের প্রধান লক্ষ্য হবে ফিডে’র বকেয়া পরিশোধ করা এবং আন্তর্জাতিক দাবা টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
এই সমস্যাগুলোর কারণে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন এখন সংকটের মুখে, তবে নতুন কমিটি অর্থ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে এবং ভবিষ্যতে ফেডারেশনের কার্যক্রম শক্তিশালী করতে উদ্যমী।