ট্রাম্পের মামলার ভবিষ্যৎ কী
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফৌজদারি মামলার পরিণতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে একাধিক ফৌজদারি এবং দেওয়ানি মামলার সম্মুখীন, এবং এ কারণে তিনি দেশটির ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন যিনি ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হবেন।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই তিনি আবারও রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন নিয়ে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর পরিণতি কেমন হবে—এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি বিশেষ কাউন্সেল জ্যাক স্মিথকে বরখাস্ত করবেন এবং এর মাধ্যমে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন এবং গোপন নথি অব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত মামলাগুলোর সমাধান করবেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কের আদালতে একটি ঘুষ কেলেঙ্কারি মামলায় ৩৪টি অপরাধমূলক অভিযোগ রয়েছে, এবং তিনি ইতোমধ্যে এসব অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এছাড়া, তাঁর বিরুদ্ধে গোপন নথি অব্যবস্থাপনা এবং নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগেও মামলা চলছে।
বিবিসি জানায়, মে মাসে নিউইয়র্কের আদালত ট্রাম্পকে এক অ্যাডাল্ট ফিল্মস্টারের মুখ বন্ধ রাখার জন্য টাকা দেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। এই মামলার সাজা রায় ২৬ নভেম্বরের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা চলাকালীন নির্বাচনে জয়ী হলে বিচারকরা তাঁর সাজা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তবে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্প কারাগারে যাবেন না। কারণ, তিনি একজন প্রবীণ ব্যক্তি এবং প্রথমবার দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তাই তাঁকে কারাগারে পাঠানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ।
সাবেক ফেডারেল প্রসিকিউটর নেয়ামা রাহমানি বলেন, “যেহেতু ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন, তিনি আপাতত ফৌজদারি মামলাগুলোর থেকে রেহাই পাবেন।” তিনি আরও বলেন, একজন বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম চলতে দেওয়া আইনগতভাবে অসম্ভব। তাই, ডিসি ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে চলমান নির্বাচনী জালিয়াতির মামলাটি খারিজ হয়ে যেতে পারে। যদি বিশেষ কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ এই মামলাটি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তবে ট্রাম্প তাকে দ্রুত বরখাস্ত করতে পারেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গোপন নথি সংরক্ষণ এবং তাদের পুনরুদ্ধার করার প্রচেষ্টার অভিযোগ রয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিশেষ কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ। ২০১৭ সালে হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর ট্রাম্প তার মার-এ-লাগোর বাড়িতে সংবেদনশীল নথি অবৈধভাবে সংরক্ষণ করেন এবং সেই নথি নিয়ে বিচার বিভাগকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এছাড়া, জর্জিয়ায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনে ফলাফল বদলানোর জন্য প্রভাবিত করার চেষ্টা করার অপরাধে মামলাও চলছে। তবে এই মামলাটি একাধিক বাধার সম্মুখীন হয়েছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ফানি উইলিসকে ‘অযোগ্য’ বলে ঘোষণার প্রচেষ্টা।
মামলাগুলোর পরিণতি যা-ই হোক, ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভবিষ্যত এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার অবস্থান যথেষ্ট অস্থির ও অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে।