যুক্তরাষ্ট্রে নারী বনাম পুরুষ প্রার্থী নিয়ে ভোটাররা আসলে কী ভাবছেন
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লিঙ্গভিত্তিক ভোটারদের সমর্থনের পার্থক্য লক্ষণীয়। সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি পুরুষদের সমর্থন বেশি, যেখানে নারীদের সমর্থন মূলত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের দিকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই লৈঙ্গিক ব্যবধান সামাজিক পরিবর্তনের প্রতিফলন। কমলা হ্যারিস প্রথম অশ্বেতাঙ্গ নারী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী, যা নির্বাচনী পরিবেশে বিশেষ এক নতুনত্ব যোগ করেছে। তবে কমলা সব সময় তাঁর লৈঙ্গিক পরিচয়ের বিষয়ে বেশি কথা বলতে চান না। গত মাসে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “জাতি ও লিঙ্গনির্বিশেষে সব আমেরিকানের জন্য এই দায়িত্ব পালনে আমি সবচেয়ে যোগ্য, এ কারণেই আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।”
এদিকে, ট্রাম্পের নির্বাচনী শিবির থেকে লৈঙ্গিক বিভেদের বিষয়টি খোলাখুলি অস্বীকার করা হলেও ডেমোক্র্যাটদের শিবিরে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এক কৌশলবিদ বলেন, যখন ভোটাররা পোলস্টারদের বলেন, কমলা “প্রস্তুত নন” বা “সঠিক ব্যক্তিত্ব নন,” এটি প্রকারান্তরে তাঁর নারী পরিচয়কেই ইঙ্গিত করে।
জনমত জরিপে দেখা যায়, পুরুষদের মধ্যে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন ১৪ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে কমলার প্রতি সমর্থন ১২ শতাংশ। সিবিএসের জরিপে উঠে আসে, লৈঙ্গিক সমতার প্রচারমূলক উদ্যোগে পুরুষদের বিরক্তি বাড়ছে এবং তাঁরা ট্রাম্পকে শক্তিশালী নেতা হিসেবে সমর্থন করছেন। অন্যদিকে, অধিকাংশ নারী মনে করেন এই উদ্যোগগুলো যথেষ্ট নয় এবং তাঁরা কমলার প্রতি সমর্থন করছেন।
২০১৬ সালের হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনের পর থেকে নারীদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এসেছে। ২০১৭ সালের #মি টু আন্দোলনের পর থেকে কর্মক্ষেত্রে নারীদের বৈষম্যের বিষয়ে সচেতনতা বেড়েছে, যা হয়তো কমলার মনোনয়ন সহজ করেছে। তবে রক্ষণশীল অনেক আমেরিকান এই পরিবর্তনগুলিকে বিরক্তিকর বলে মনে করছেন, এবং পুরোনো লৈঙ্গিক ধারণা ধরে রেখেছেন।
ফলে, নির্বাচনের ফলাফল কোন দিকে যাবে, তা নির্ধারণে নারী ও পুরুষ ভোটারদের মতামতই বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।