সাড়ে তিন বছরে সূচকের সর্বোচ্চ পতন
গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতনের মুখে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। আজ রোববারও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হওয়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৪৯.২০ পয়েন্ট কমে ৪৯৬৫.৩৯ পয়েন্টে নেমেছে, যা ২.৯১ শতাংশ হ্রাস। দরপতনের হার অনুযায়ী, এই পতন ২০২১ সালের ৪ এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ। সেদিন ডিএসইএক্স সূচক ১৮১ পয়েন্ট বা ৩.৪৪ শতাংশ কমে ৫০৮৯ পয়েন্টে নেমে এসেছিল।
আজ ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৯৭ কোম্পানির মধ্যে ৩৩৯টির শেয়ার মূল্য কমেছে, যার মধ্যে ১৫৯টি কোম্পানির শেয়ারের দর ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১৬ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই রকম দরপতন লক্ষ্য করা গেছে।
অর্থমন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে দুর্নীতি এবং দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির কারণেই বাজারে এই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ধারাবাহিক কারসাজির মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের মূল্য বাড়ানো হয়েছিল, যা বাজারের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেছে। এ সমস্যা সমাধানে নতুন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বাজারে সুশাসন ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে, কৃত্রিম ফ্লোর প্রাইস অপসারণ করেছে এবং অতীতের কারসাজিতে জড়িত কিছু প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, বড় বিনিয়োগকারীদের মূলধনী মুনাফায় ২৫ শতাংশ কর আরোপের কারণে এবং নীতি সুদহার ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ বাজার থেকে সরে যাচ্ছেন। বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকে ঝুঁকিহীন আমানতে ১০-১২ শতাংশ সুদ পাওয়ায় শেয়ারবাজার থেকে দূরে থাকছেন। গত আড়াই মাসের ধারাবাহিক দরপতনে বিনিয়োগকারীদের হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে দুপুরে কয়েকশ বিনিয়োগকারী ডিএসইর পুরাতন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন এবং বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেছেন। অন্যদিকে, বিএসইসি জানিয়েছে, বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি এখন উন্নতির দিকে।