ফোন হ্যাকড হওয়া থেকে রক্ষা পেতে যা করবেন
বর্তমান যুগকে মোবাইল ফোনের যুগ বলা একেবারেই অমূলক হবে না। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল ফোন এতটাই অপরিহার্য হয়ে উঠেছে যে, এটি ছাড়া একটি দিনও কল্পনা করা কঠিন। ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, অর্থনীতি থেকে শুরু করে প্রায় সবক্ষেত্রেই মোবাইল ফোন অপরিহার্য ভূমিকা পালন করছে। তবে মোবাইল ফোন যেমন জীবনকে সহজ করেছে, তেমনি এর হ্যাকিংয়ের শিকার হয়ে অনেকেই বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। কারণ, ফোন হ্যাকড হলে ফোনের সব তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে যায়। ফোন ব্যবহারকারী কোথায় যাচ্ছেন, কী বলছেন বা কার সঙ্গে কথা বলছেন—সবকিছু হ্যাকারদের নজরদারিতে চলে আসে। এমনকি ফোন কল না করেও ফোনের পাশে রেখে কথা বললেও তারা সেই কথোপকথন ট্র্যাক করতে পারে এবং ফোনের ফ্রন্ট ও ব্যাক ক্যামেরার মাধ্যমে সব কিছু পর্যবেক্ষণ করতে পারে।
ফোন হ্যাকিং থেকে সাইবার অপরাধীরা ব্ল্যাকমেইলিং, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও হাতিয়ে নিতে পারে। এর ফলে অনেক সময় ভয়াবহ ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়, যা আত্মহত্যার মতো পরিস্থিতিরও সৃষ্টি করতে পারে। তাই স্মার্টফোন ব্যবহারের পাশাপাশি এর নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ফোন হ্যাকিং কীভাবে হয়:
- ফিশিং আক্রমণ: প্রতারণার মাধ্যমে ফোনে ম্যালওয়ার ইনস্টল করা হয়।
- জিরো-ক্লিক এক্সপ্লয়ট: কোনো ইন্টারঅ্যাকশন ছাড়াই ফোন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
- ক্ষতিকারক অ্যাপ ও ওয়াই-ফাই: কিছু ক্ষতিকারক অ্যাপ বা ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে হ্যাকাররা ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে।
- স্পাইওয়ার: দূর থেকে কথোপকথন নজরদারি করতে পারে এবং রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে কল বা টেক্সটের তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
ফোন হ্যাকিং রোধে করণীয়:
- নিয়মিত অ্যাপস ও অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করতে হবে।
- সপ্তাহে একবার ফোন রিস্টার্ট করা উচিত।
- অননুমোদিত অ্যাপ ডাউনলোড করা এড়িয়ে চলুন। সবসময় অ্যাপল স্টোর বা গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করুন।
- অজানা লিংক বা ইমেইলের লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন।
- পাবলিক নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন এবং নিরাপত্তার স্বার্থে ভিপিএন ব্যবহার করুন।
- অননুমোদিত ডিভাইস ফোনের সঙ্গে কানেক্ট করা থেকে বিরত থাকুন ও ব্লুটুথ বন্ধ রাখুন।
- শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য ফেস বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট শনাক্তকরণ সক্রিয় রাখুন।
এভাবে কিছু সহজ সতর্কতা অবলম্বন করে ফোন হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।