রাজনীতি ও ভোট থেকে আওয়ামী লীগকে বিরত রাখার প্রশ্নে নতুন বিতর্ক, কী বলছে বিএনপিসহ অন্য দল
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগসহ গত তিনটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার বিষয়ে সরকারের বক্তব্য নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে, বিএনপিসহ বিভিন্ন দল বলছে, নির্বাচনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা জরুরি, অন্যথায় সংকট তৈরি হতে পারে।
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনের পতনের পর দলটির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে নানা মহলে আলোচনা চলছে। প্রথমবারের মতো অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সরাসরি বক্তব্য এসেছে। শনিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেন, যারা গত তিনটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে অবৈধভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হবে। কীভাবে তা বাস্তবায়ন করা হবে, সেটি নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হলে দেখা যাবে।
তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, কোনো বিশেষ গোষ্ঠীকে রাজনীতি থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশনই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা জোনায়েদ সাকি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শাসনে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তবে রাজনীতি থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত জনগণ বা আদালতের ওপর নির্ভর করা উচিত।
আওয়ামী লীগের শাসনামলের তিনটি নির্বাচনের (২০১৪, ২০১৮, ২০২৪) বৈধতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আগের রাতে ভোটগ্রহণের অভিযোগ ওঠে এবং ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সরকার পতন ঘটে। এসব নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোকে কার্যত নির্বাচনের বাইরে রাখা হয়েছিল, যার ফলে এখন আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করার প্রশ্নও উঠছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান মনে করেন, এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে, কারণ সরকার পতনের আন্দোলনে অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসছে।