রাশিয়ার কারাগারে মৃত্যু হলো ইউক্রেনের নারী সাংবাদিকের
রাশিয়ার কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন ইউক্রেনের সাংবাদিক ভিক্টোরিয়া রোশসিনা। তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৭ বছর। এ সপ্তাহে ভিক্টোরিয়ার বাবা রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি সংক্ষিপ্ত চিঠি পান, যেখানে তাঁর মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয়।
২০২৩ সালের আগস্টে ইউক্রেনের রুশ-অধিকৃত অঞ্চল থেকে ভিক্টোরিয়া নিখোঁজ হন। নিখোঁজ হওয়ার ৯ মাস পর রুশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে আটক করার খবর নিশ্চিত করে, তবে আটকের কোনো কারণ জানানো হয়নি।
রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত সেনাদের মৃতদেহ বিনিময় করে থাকে। ভিক্টোরিয়ার মৃতদেহও এভাবে ফেরত পাঠানো হবে বলে রাশিয়ার পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোনো ব্যাখ্যা চিঠিতে ছিল না। মৃত্যুর তারিখ হিসেবে ১৯ সেপ্টেম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।
ভিক্টোরিয়ার বাবা-মা আগে থেকেই তাকে বিপজ্জনক স্থানে কাজ করতে পাঠাতে মানা করেছিলেন। তাঁর সাবেক সহকর্মীরাও তাকে থামানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ভিক্টোরিয়া ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
গত মে মাসে ভিক্টোরিয়া রাশিয়ার কুখ্যাত তাগানরোগের ২ নম্বর বন্দিশালায় বন্দী ছিলেন, যেখানে ইউক্রেনের বন্দীদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়। তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে অন্য একটি স্থানে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বন্দী বিনিময়ের সময় তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মিডিয়া ইনিশিয়েটিভ ফর হিউম্যান রাইটসের পরিচালক তেতিয়ানা কাতরিচেঙ্কো বলেন, ভিক্টোরিয়াকে মস্কোর লেফোরতোভো কারাগারে নেওয়া হতে পারে, যা এফএসবি সিকিউরিটি সার্ভিসের অধীনে পরিচালিত হয় এবং গুরুতর অপরাধে অভিযুক্তদের সেখানে রাখা হয়।
ভিক্টোরিয়ার বাবা ৩০ আগস্ট মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তখন তিনি অনশন করছিলেন। বাবার অনুরোধে ভিক্টোরিয়া অনশন ভাঙতে রাজি হন।
ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে, তবে কী পরিস্থিতিতে তাকে আটক করা হয়েছিল এবং তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল কি না, তা জানা যায়নি। ইউক্রেনের একজন পার্লামেন্ট সদস্য বলেছেন, ‘এটা হত্যা, একজন জিম্মিকে হত্যা।’
রাশিয়া এখন পর্যন্ত ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।