কমিউনিস্টশাসিত চীনের ৭৫ বছর পূর্তি, সি কি পারবেন ‘দুর্বল অর্থনীতিকে’ ঠিক করতে
গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ‘গোল্ডেন উইক’ উদ্যাপন করছে দেশটির জনগণ। এমন সময়ে চীনের অর্থনীতিকে চাঙা করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং তার নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টি। দেশটির অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান ও অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে আবাসন খাত, পুঁজিবাজার এবং সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, পিপল’স ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি), সম্প্রতি বিভিন্ন পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে শেয়ার কেনার জন্য তহবিল সংগ্রহ, বিমা কোম্পানি, ব্রোকার এবং সম্পদ ব্যবস্থাপকদের কাছ থেকে ৮০০ বিলিয়ন ইউয়ান ধার নেওয়া এবং ঋণ নেওয়ার খরচ কমানোর উদ্যোগ। পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনতে চীনের এই পদক্ষেপগুলোকে বিনিয়োগকারীরা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন, যার ফলে সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স ও হংকংয়ের হ্যাং সেং ইনডেক্সে উল্লেখযোগ্য উত্থান দেখা গেছে।
তবে অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, এই উদ্যোগগুলো যথেষ্ট নাও হতে পারে। তারা মনে করেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে আরও বড় ও গভীর সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশ্লেষকদের মতে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নিম্নমুখী ধারা এবং আস্থার ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে হলে চীনের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য আরও বিস্তৃত পরিকল্পনা প্রয়োজন।
মুডি’স অ্যানালিটিকসের অর্থনীতিবিদ হ্যারি মারফি ক্রুজ বলেন, “চীনের দুর্বলতা কেবল ঋণ নয়; বরং এটি আত্মবিশ্বাসের সংকট থেকে উদ্ভূত।” পরিবার ও প্রতিষ্ঠানগুলো সহজ শর্তেও ঋণ গ্রহণ করতে চাইছে না, যা অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতিশীলতায় বড় বাধা।
চীনের সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ স্কুল অব পাবলিক পলিসির সহযোগী অধ্যাপক আলফ্রেড উ বলেন, “সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো ভাগ্য বরণ করা এড়ানো চীনের নেতাদের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগ।” তিনি বলেন, অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে আস্থা বাড়ানো এবং সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা জরুরি।
গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র পিপল’স ডেইলিতে প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ‘উঁচু মানের উন্নয়ন’ ও ‘নতুন উৎপাদনশীল শক্তি’র ওপর গুরুত্বারোপ করে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে চীনের আরও ভালো অবস্থায় পৌঁছানোর জন্য এসব নীতির সফল বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।