বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকার বাইরেও কমিটি করবে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি তাদের সাংগঠনিক কাঠামো বিস্তৃত করতে যাচ্ছে। দুই প্ল্যাটফর্মই জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির সাংগঠনিক কাঠামো সম্প্রসারণের কাজ আগামী সপ্তাহ থেকে দৃশ্যমান হতে পারে, আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া অক্টোবরেই শুরু হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক সমন্বয়কের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিল। ১৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশ করে, যার লক্ষ্য হলো গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংহত করে দেশ পুনর্গঠন করা।
তবে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, দখল এবং শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা-উপজেলায় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাতে অপকর্মে লিপ্তদের সহজে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম জানান, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে টিম গঠনের মূল উদ্দেশ্য হলো অপকর্মকারীদের থেকে প্রকৃত সমন্বয়কদের আলাদা করা। এছাড়া, সংগঠনের টিমের কেউ অপরাধে জড়ালে তাকে বহিষ্কার করা এবং আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা মনে করেন, সংগঠনের কাজ জেলা পর্যায়ে এগিয়ে নিতে এবং গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধরে রাখতে একটি সংগঠিত টিম থাকা জরুরি।
জাতীয় নাগরিক কমিটিও তাদের কাঠামো সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেছে। শিগগিরই বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক করার পরিকল্পনা রয়েছে। নাগরিক কমিটি চারটি টিম গঠন করেছে—আইনসংক্রান্ত, স্বাস্থ্যসংক্রান্ত, মিডিয়া এবং আইটি টিম। বিশেষ করে আইন ও স্বাস্থ্য টিমের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তারা গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সহায়তা এবং নিহত বা আহতদের পরিবারের জন্য আইনগত সহায়তার উদ্যোগ নিচ্ছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক দল গঠন বা আগামী নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, এমন প্রশ্নে কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, দেশের মানুষের ইচ্ছা অনুযায়ী এ বিষয়ে চিন্তা করা যেতে পারে। তিনি আরও জানান, তারা ফ্যাসিবাদবিরোধী অবস্থান নিয়ে এবং জাতীয় সংহতি ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করতে চান।