অকাল বন্যায় উত্তরে ডুবল লোকালয়
টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে তিস্তা পাড়ে অসময়ে বন্যা দেখা দিয়েছে, যা রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকাকে প্লাবিত করেছে। কোথাও কোথাও নদীভাঙন দেখা দিয়েছে, এবং অনেক মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে গবাদি পশু ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে সড়ক ও বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকটও দেখা দিয়েছে দুর্গত এলাকাগুলোতে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, উজানে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় পানিপ্রবাহ কমলেও, ভাটি এলাকা কাউনিয়ায় পানি আরও বাড়তে পারে। রবিবার দুপুরে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। শনিবার সন্ধ্যায় পানি কিছুটা কমলেও রাতের মধ্যে আবার বিপৎসীমা অতিক্রম করে।
বন্যার কারণে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের আট উপজেলায় ৬০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। লালমনিরহাট-ঢাকা রেলপথের কিছু অংশে পানি উঠায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে, যেখানে আমনক্ষেত ও শাকসবজির জমি নষ্ট হয়েছে। এ অঞ্চলের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানির কারণে বন্ধ রয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানিয়েছেন, ১০ হাজার পানিবন্দি পরিবারের জন্য নগদ ৩ লাখ টাকা, ৯০ টন চাল, ৫ লাখ টাকা শিশুখাদ্যের জন্য, এবং ৫ লাখ টাকা গোখাদ্যের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কুড়িগ্রামেও ধরলা, দুধকুমার, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানির বৃদ্ধি পাওয়া চতুর্থ ধাপের বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীর ভাঙনে শতাধিক বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।