বিসিএস আন্তক্যাডার বৈষম্যের অবসান হবে কবে
বিসিএস ক্যাডারের পদোন্নতির নৈরাজ্য আজও দূর করা সম্ভব হয়নি। বিসিএসে এক ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের যে বৈষম্য, তা সরকারি চাকরির একটি লজ্জাজনক দিক। একই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, পরীক্ষা এবং সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে যোগদান করা কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈষম্য সুস্থ পদ্ধতি হিসেবে গণ্য করা যায় না।
রাজনৈতিক সরকারের জন্য প্রশাসন ও পুলিশ ক্যাডার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই ক্যাডারের কর্মকর্তারা দ্রুত পদোন্নতি পান, অন্য ক্যাডারের তুলনায়। এর ফলে, অনেক কর্মকর্তার মধ্যে লজ্জা ও অপমানের অনুভূতি তৈরি হয়। ২০ বছরে মাত্র একবার পদোন্নতি পাওয়ার রেকর্ড রয়েছে, এবং অনেকেই পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যান।
প্রশাসন ক্যাডার সব সময় রাজনৈতিক সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে সম্প্রতি পুলিশ ক্যাডারও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতি ক্যাডারগুলোকে আরও বেশি ক্ষমতাশালী করেছে এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্য বাড়িয়েছে।
সুবিধার ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় প্রশাসন ও পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের। যেমন, প্রশাসন ক্যাডারের উপসচিবদের জন্য সুদমুক্ত ঋণ ও মাসিক ভাতা সুবিধা দেওয়া হয়। বর্তমান সরকারকে অবশ্যই এই বৈষম্য দূর করতে উদ্যোগ নিতে হবে।
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের হাত থেকে অন্য ক্যাডারের পদোন্নতি নির্ভর করছে, যা বৈষম্য বাড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায়, অন্যান্য ক্যাডারে এক বা একাধিক পদোন্নতি দেওয়া প্রয়োজন।
বিসিএস চাকরির জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণের পদ্ধতি পরিবর্তন করা জরুরি। একই দিনে যোগদান করা কর্মকর্তাদের পদোন্নতি সমানভাবে দিতে হবে, এবং সচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদেরকে পদোন্নতি দেওয়া উচিত।
এখন অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এসব বৈষম্য দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হলে, সমতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরির কাঠামো আরও শক্তিশালী হবে।