প্রবল বন্যায় বিধ্বস্ত চার মহাদেশ
সম্প্রতি এশিয়া, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবল বন্যা দেখা দিয়েছে। চাদ, ভিয়েতনাম, অস্ট্রিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার মতো বৈচিত্র্যময় অঞ্চলগুলোতে প্রবল বৃষ্টির কারণে সৃষ্টি হওয়া এই বন্যায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। বহু শহর পানির নিচে তলিয়ে গেছে এবং ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে লাখ লাখ মানুষ।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট এই চরম আবহাওয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ভারী বৃষ্টিপাত, তাপপ্রবাহ, খরা এবং সাইক্লোনের মতো দুর্যোগ বেড়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। লরেন্স বার্কলে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানী মাইকেল ওয়েহনার বলেন, চরম আবহাওয়া সর্বত্রই আরও শক্তিশালী হচ্ছে এবং বন্যার পরিস্থিতি আরও গুরুতর হবে।
দক্ষিণ ভারতের কেরালায় গ্রীষ্মের শুরুতে প্রবল বৃষ্টির ফলে ভূমিধস হয় এবং প্রাণহানি ঘটে, যা মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। আগস্টে প্রকাশিত এক বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন ভারী বর্ষণে সৃষ্ট ১০ শতাংশ ভূমিধসের জন্য দায়ী।
বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া আগের ধারণার চেয়ে আরও দ্রুততর হচ্ছে। জাতিসংঘের মতে, এই পরিস্থিতি সারাবিশ্বে চরম আবহাওয়ার ঝুঁকি বাড়াবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কার্বন নির্গমন কমানোই এই পরিবর্তনের গতি কমানোর একমাত্র উপায়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের জলবায়ু সম্পর্কিত বিশেষ দূত জন কেরি বলেছেন, এখন বিশ্বের জন্য বাস্তব এবং শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে।
জাতিসংঘের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের কর্মকাণ্ডের কারণে পরিবেশের ওপর যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে, তা মানবসমাজের জন্য একটি “লাল সংকেত”। এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ সমুদ্রের পানিস্তরের উচ্চতা ২ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনাকে এখন আর উড়িয়ে দেওয়া যায় না।