বিচারবহির্ভূত হত্যা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে দু’জনকে হত্যার ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। এই নৃশংস ঘটনাগুলোকে নিন্দনীয় ও দুঃখজনক আখ্যায়িত করে তাঁরা বলেন, গণপিটুনি বা মব ট্রায়ালের চলমান প্রবণতা দ্রুত বন্ধ করা প্রয়োজন। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যতক্ষণ পর্যন্ত পুলিশ কার্যকরভাবে ব্যবস্থা নিতে না পারে, ততক্ষণ জনগণকে সচেতন করতে হবে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, এসব ঘটনা দেখে তিনি হতবাক এবং অত্যন্ত হতাশ। তিনি জানান, শুধু পিটিয়ে হত্যা নয়, ঢাবির ঘটনার পেছনে আর্থিক দাবি করার মতো অমানবিকতা দেখা গেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তিনি আরও বলেন, এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে নামবে, যা স্বাভাবিক এবং প্রয়োজনীয়। এসব ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অবিলম্বে নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন অমানবিক ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা এ ধরনের অপরাধ করেছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা এবং শাস্তি দেওয়া উচিত। কারও ভিন্ন মতাদর্শ থাকলেই তাকে আক্রমণ করা সমীচীন নয়। যেকোনো অভিযোগ থাকলে তা আইনের কাছে সোপর্দ করতে হবে। এমন নিষ্ঠুর ঘটনা যদি চলতে থাকে, তাহলে দেশের উন্নয়ন ও পরিবর্তনের সব প্রচেষ্টা অর্থহীন হয়ে যাবে।
মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, মব ট্রায়ালের প্রবণতা খুবই উদ্বেগজনক। সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে। জনগণকে সচেতন করা এবং উদ্বুদ্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা এবং পূর্ববর্তী শাসন ব্যবস্থার প্রভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই জনগণের মধ্যে বোধশক্তি জাগ্রত করা এবং আইনকে নিজের হাতে না নেওয়ার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বিশিষ্টজনেরা সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোতে এমন ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বলে অভিমত দেন এবং দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর জোর দেন।