বিদেশি ব্যাংকগুলোকে আশ্বস্ত করলেন গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বিদেশি ব্যাংকগুলোকে আশ্বস্ত করে বলেছেন যে, বাংলাদেশ কখনও এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) দায় পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি এবং ভবিষ্যতেও এর কোনো সমস্যা হবে না। মঙ্গলবার আয়োজিত বিশেষ সভায় তিনি এ কথা জানান। সভাটি ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ১২২ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
এ সভার আয়োজন করে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি), যেখানে বিদেশি করেসপন্ডেন্ট ব্যাংকগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। গভর্নর ব্যাংক খাতের বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ তুলে ধরেন এবং এলসি নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা দূর করার জন্য বিদেশি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
গভর্নর ড. মনসুর জানান, বিগত সরকারের সময় ২ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ বকেয়া ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এর মধ্যে ৮০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে এবং বাকি ১.২ বিলিয়ন ডলারও দ্রুত পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আন্তঃব্যাংক বাজার থেকে ডলার কিনে এ অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে।
গভর্নর আরও বলেন, ব্যাংক খাত সংস্কারে ইতিমধ্যে একাধিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করা হয়েছে এবং যেসব ব্যাংকের তারল্য সংকট রয়েছে, তা কাটানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ চালু আছে। প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করেছে এবং বৈদেশিক মুদ্রাবাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়ে উঠছে। এসব কারণে রিজার্ভের উন্নতিও লক্ষণীয়। তিনি আরও বলেন, আর্থিক খাতে মানুষের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।
এবিবি ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বৈঠকের শুরুতে বলেন, সরকারের পরিবর্তনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং আর্থিক খাতে নেওয়া সংস্কার কার্যক্রমের ফলে মানুষের আস্থা ফিরছে। বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্সও বাড়ছে, যা ডলার বাজারকে স্থিতিশীল করছে এবং দেশের পরিশোধ সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সভায় উপস্থিত একজন কর্মকর্তা জানান, আকস্মিক সরকার পরিবর্তনের পর বিদেশি ব্যাংকগুলো কিছুটা সতর্ক ছিল। বিশেষ করে দুবাইভিত্তিক ব্যাংকগুলো এলসির কনফারমেশন নিয়ে দ্বিধায় ছিল। তবে গভর্নর তাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, এলসি পরিশোধে কোনো সমস্যা হবে না, এবং এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।