July 8, 2025
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: আবু সাঈদকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট, কেন্দুয়ায় তরুণ আটক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: আবু সাঈদকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট, কেন্দুয়ায় তরুণ আটক

জুন ২৮, ২০২৫

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট করার অভিযোগে এক তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তি হলেন সুমন আহমেদ (১৮), যিনি সদ্য এসএসসি পাস করেছেন এবং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

ঘটনার পটভূমি

আবু সাঈদ ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ মুখ, যিনি পুলিশের দমন-পীড়নের মুখে প্রাণ হারান। তাঁর মৃত্যু ছাত্রসমাজ ও নাগরিক পরিসরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই আবেগপ্রবণ পরিস্থিতিতে তাঁকে নিয়ে কোনো ধরনের ব্যঙ্গ বা অবমাননাকর মন্তব্য সামাজিকভাবে সংবেদনশীল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

পোস্ট ও প্রতিক্রিয়া

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সুমন আহমেদ নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে আবু সাঈদের একটি ছবি পোস্ট করে সেটিতে অশালীন মন্তব্য ও ব্যঙ্গাত্মক ইমোজি সংযুক্ত করেন। এই পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে কেন্দুয়া শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। তাঁরা অভিযুক্ত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

পুলিশি পদক্ষেপ ও আইনি প্রক্রিয়া

বিক্ষোভের পর রাত ৯টার দিকে সান্দিকোনা এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে সুমনকে আটক করে পুলিশ। কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।

সামাজিক ও আইনি দৃষ্টিকোণ

এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও তার সীমারেখা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। একদিকে, মতপ্রকাশের অধিকার একটি মৌলিক অধিকার, অন্যদিকে, তা যেন কারও ব্যক্তিগত মর্যাদা ও সামাজিক আবেগকে আঘাত না করে, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত কোনো আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিকে নিয়ে কটূ মন্তব্য আইনত ও নৈতিকভাবে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

সতর্ক বার্তা ও ভবিষ্যৎ করণীয়

এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যায়, সামাজিক মাধ্যমে দায়িত্বহীন আচরণ কীভাবে সামাজিক উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে। এটি কেবল একটি ফেসবুক পোস্ট নয়, বরং একটি বৃহৎ আন্দোলন ও জনগণের আবেগের সঙ্গে যুক্ত প্রসঙ্গ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সমাজের দায়িত্বশীল অংশের উচিত এ ধরনের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানানোর পাশাপাশি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবেদনশীলতার ভারসাম্য রক্ষা করা।

Leave a Reply