
বজ্রপাতে পাঁচ জেলায় নারীসহ নিহত ৫
২০২৫ সালের জুন মাসের প্রথম রোববারে বাংলাদেশের পাঁচটি জেলায় বজ্রপাতের ঘটনায় পাঁচজন নিহত ও অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। এইসব মৃত্যুর পেছনে একটি সাধারণ প্যাটার্ন লক্ষ্য করা গেছে—সবাই খোলা আকাশের নিচে মাঠে, নদীতে কিংবা ঘাস কাটার সময় বজ্রপাতের শিকার হন। নিচে অঞ্চলভিত্তিক বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো:
১. মানিকগঞ্জ (ঘিওর)
- নিহত: সূর্য রানী সরকার (৩২), গৃহবধূ।
- আহত: তার ছেলে বাঁধন (১০) ও প্রতিবেশী মায়া রানী সরকার (৪০)।
- ঘটনা: গরুর জন্য ঘাস কাটার সময় বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাত হয়।
- চিকিৎসা: আহতদের মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
২. দিনাজপুর (হাকিমপুর)
- নিহত: তাসলিমা বেগম (৪৮), মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মৃত্যু।
- আহত: আবু রাহাত সরকার (২৪), পাওয়ারটিলার ঢাকতে গিয়ে বজ্রাঘাতে আহত।
- চিকিৎসা: হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি।
৩. বাগেরহাট (শরণখোলা)
- নিহত: ইউনুস খান (২৬), প্রবাসী।
- ঘটনা: বলেশ্বর নদীতে গোসল করার সময় বজ্রপাত।
৪. বরগুনা (আমতলী)
- নিহত: বেল্লাল খান (৩২), কৃষক।
- ঘটনা: মাঠে ঘাস কাটার সময় বজ্রপাতে মৃত্যু।
৫. সুনামগঞ্জ (শাল্লা)
- নিহত: সেলিম মিয়া (৩০), মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান।
সাধারণ চিত্র ও বিশ্লেষণ
প্রতিরোধ ও করণীয়
- বজ্রপাতের সময় সতর্কতা: খোলা মাঠ, নদী বা জলাশয়ের পাশে না যাওয়া।
- আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসরণ: বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে মাঠে বা খোলা জায়গায় কাজ না করা।
- জনসচেতনতা বৃদ্ধি: গ্রাম পর্যায়ে বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করা।
- সুরক্ষা ব্যবস্থা: বজ্রনিরোধক যন্ত্র বা আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন বিশেষ করে কৃষিপ্রধান গ্রামীণ এলাকায়।
এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি থেকে বোঝা যায়, বজ্রপাত এখন গ্রামবাংলায় একটি ঘন ঘন ঘটতে থাকা প্রাণঘাতী দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকা বজ্রপাতের ঝুঁকিতে পড়ছে। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ, প্রযুক্তিনির্ভর সতর্কতা ব্যবস্থা এবং জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া এই প্রাণহানি রোধ করা সম্ভব নয়।