
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয় উত্তাল
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে সচিবালয় এলাকাজুড়ে চলছে সরকারি কর্মচারীদের টানা বিক্ষোভ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়ো হয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। সচিবালয়ের নতুন ভবনের নিচে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সামনেই এ বিক্ষোভ চলতে থাকে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার
বিক্ষোভ ঘিরে সচিবালয়জুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধান ফটকে মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র সোয়াট বাহিনী, বাইরে অবস্থান করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারছেন না কোনো দর্শনার্থী। সাংবাদিকদের প্রবেশ নিয়েও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এবং দুপুর ১২টার দিকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আজ সচিবালয়ে জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ থাকবে।
ধাপে ধাপে কর্মসূচি, বাড়ছে পরিসর
গতকাল ছিল টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি। আজ আবারও কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে সচিবালয়ের কর্মচারীরা। তাদের দাবি, ২০২৫ সালের সংশোধিত সরকারি চাকরি অধ্যাদেশটি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের অধিকার খর্ব হচ্ছে বলে মনে করছেন।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, শুধু রাজধানীর কর্মচারীরাই নয়—এই আন্দোলনকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে সচিবালয়ের বাইরে দেশের সব সরকারি দপ্তরের কর্মচারীদেরও আজ একযোগে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপ নিচ্ছে কর্মসূচি
সচিবালয়ের সব কর্মচারী সংগঠন একত্রিত হয়ে গঠন করেছে ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম’। এই ফোরামের ব্যানারে তারা এখন থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে আন্দোলন এখন আর বিচ্ছিন্ন কোনো কর্মসূচি নয়, বরং একটি ঐক্যবদ্ধ সংগঠনের আওতায় সংগঠিত হচ্ছে।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-কে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া কর্মচারীদের বিক্ষোভ এখন একটি বড় সামাজিক ও প্রশাসনিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও কর্মচারীদের অসন্তোষ এবং দাবির প্রতি সরকার কী ধরনের সাড়া দেয়, তা-ই এখন দেখার বিষয়। আন্দোলনের প্রসার ও ব্যাপকতা ইঙ্গিত দেয়, এই সংকট দ্রুত সমাধান না হলে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে বড় ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে।