November 13, 2025
সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমান খালাস

সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমান খালাস

মে ২৭, ২০২৫

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে করা আলোচিত মামলায় খালাস পেয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমান। মঙ্গলবার (২৭ মে ২০২৫) ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তারিক এজাজ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় শফিক রেহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রায় ঘোষণার প্রেক্ষাপট ও শুনানি

  • শফিক রেহমানের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ।
  • শুনানিতে তিনি বলেন, “এই মামলা ভিকটিম নিজে দায়ের করেননি, বরং পুলিশ অতি উৎসাহে মামলা করেছে। কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেই, সাক্ষ্য-প্রমাণে ষড়যন্ত্র প্রমাণ হয়নি।”
  • রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. খলিলুর রহমান নিজেও এ মামলাকে “রাজনৈতিক হয়রানিমূলক” বলে উল্লেখ করেন এবং খালাসে তাদের আপত্তি নেই বলে জানান।

মামলার পটভূমি ও পূর্ববর্তী রায়

  • মামলার সূত্র অনুযায়ী, ২০১১ সালের আগে থেকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশে বসে বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠন জাসাসের কয়েকজন নেতা মিলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন বলে অভিযোগ আনা হয়।
  • ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন থানায় মামলাটি দায়ের করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান।
  • ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
  • গত বছরের ১৭ আগস্ট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচজনকে দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
  • পরে ২০২4 সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মাহমুদুর রহমান খালাস পান। এবার খালাস পেলেন শফিক রেহমান।

দণ্ড ও আপিল সংক্রান্ত তথ্য

  • দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ১২০-খ ধারায় (ষড়যন্ত্র) ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
  • রায় অনুযায়ী, দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে অতিরিক্ত একমাস করে কারাভোগের নির্দেশ ছিল।
  • সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে শফিক রেহমান ও মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার সাজা গত বছর এক বছরের জন্য স্থগিত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে।
  • শফিক রেহমান জামিনে মুক্ত ছিলেন এবং সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন।

শফিক রেহমানের খালাসের মধ্য দিয়ে এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায় শেষ হলো। রাষ্ট্রপক্ষ নিজেই মামলাকে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক হিসেবে অভিহিত করায় মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক হিসেবে রেহমানের প্রতি এই মামলার প্রভাব যেমন সামাজিক পর্যায়ে আলোচিত হয়েছে, তেমনি আদালতের রায় আইনি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখার দৃষ্টান্ত হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকলো।

Leave a Reply