July 16, 2025
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি মঙ্গলবার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি মঙ্গলবার

মে ২৬, ২০২৫

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুই মামলায় হাইকোর্টের রায়ে খালাস পাওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলের শুনানি আগামীকাল (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠিত হবে।

সোমবার (আজ) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই দিন ধার্য করেন। এদিন আদালতের কার্যতালিকায় রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল দুটি ১ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

এর আগে গত ১৫ মে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ ২৬ মে পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছিলেন। প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতে আজ শুনানি না হয়ে তা আগামীকালের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

আসামিপক্ষে আদালতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। তিনি জানান, আজ লিভ টু আপিল শুনানি শুরু হলেও প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতে বিষয়টি পরবর্তী দিনে পুনঃশুনানির জন্য রাখা হয়েছে।

পূর্ববর্তী রায় ও আপিল প্রক্রিয়া

  • হাইকোর্টের রায়:
    বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে দীর্ঘ শুনানি শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ একাধিক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
  • পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ:
    গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে হত্যা ও বিস্ফোরক মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় (৭৯ পৃষ্ঠার) প্রকাশিত হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে।
  • চেম্বার আদালতের আদেশ:
    ২০২৪ সালের ১৩ মার্চ আবেদন দুটি চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে এবং সেখান থেকে নিয়মিত আপিল বেঞ্চে পাঠানো হয়।

গ্রেনেড হামলার পটভূমি

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার এক সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন এবং শেখ হাসিনা গুরুতর আহত হন।

বিচারিক আদালতের রায় (২০১৮)

  • মৃত্যুদণ্ড:
    সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে।
  • যাবজ্জীবন:
    তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে।
  • অন্যান্য দণ্ড:
    ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।

(no title)

এই রায়ের ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য ২০১৮ সালেই হাইকোর্টে পাঠানো হয়। কারাগারে থাকা দণ্ডপ্রাপ্তরা পৃথকভাবে জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন।

শুনানির ধাপ ও বিচারপতির পরিবর্তন

২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর হত্যা মামলায় আপিল শুনানি শুরু হলেও সরকার পরিবর্তনের পর দ্বৈত বেঞ্চের একজন বিচারপতি বদল হয়। এরপর বেঞ্চ পুনর্গঠন করে ৩১ অক্টোবর থেকে নতুন করে শুনানি শুরু হয়।

বর্তমানে মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। লিভ টু আপিল গৃহীত হলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আপিল শুনানির পথ সুগম হবে। এটি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার কার্যক্রমের ভবিষ্যত নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।

Leave a Reply