July 16, 2025
সচিবালয়ে বিক্ষোভ: সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি

সচিবালয়ে বিক্ষোভ: সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি

মে ২৬, ২০২৫

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া বাতিলের দাবিতে আজ সোমবার রাজধানীর সচিবালয় এলাকায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা দ্রুত সচিবালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোর সামনে ছড়িয়ে পড়ে।

বিক্ষোভের বিবরণ

  • সময় ও স্থান:
    বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
  • নেতৃত্ব:
    মিছিলে নেতৃত্ব দেন পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবির ও কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম
  • স্লোগান:
    বিক্ষোভকারীরা ‘অবৈধ কালো আইন মানব না’, ‘আপস না সংগ্রাম’, ‘লেগেছে রে রক্তে আগুন লেগেছে’—ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত করে তোলে সচিবালয়।
  • অংশগ্রহণ:
    বিভিন্ন দপ্তর থেকে কর্মচারীরা নেমে এসে মিছিলে যোগ দেন, অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকে।
  • আন্দোলনের হুঁশিয়ারি:
    আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন—দাবি না মানলে সচিবালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।

পটভূমি ও দাবির কারণ

  • অধ্যাদেশের অনুমোদন:
    গত বৃহস্পতিবার সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। কর্মচারীরা একে “নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন” বলে অভিহিত করেছেন।
  • গেজেট প্রকাশ:
    গতকাল (রবিবার) সরকার এই অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করে জানায়—“ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।”

বিতর্কিত ধারা: ৩৭ক ও বিশেষ বিধান

সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-তে নতুনভাবে সংযোজন করা হয়েছে ধারা ৩৭ক। এতে সরকারি কর্মচারীদের জন্য চারটি অপরাধ এবং তিন ধরনের শাস্তির বিধান উল্লেখ করা হয়েছে:

● অপরাধসমূহ:

  1. এমন কোনো কাজ করা, যা অন্য কর্মচারীর শৃঙ্খলা বা আনুগত্যে ব্যাঘাত ঘটায়।
  2. সংগঠিত বা ব্যক্তিগতভাবে কাজে অনুপস্থিত থাকা (ছুটি বা যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া)।
  3. অন্যকে কাজে না আসতে বা দায়িত্ব পালন না করতে উসকানি দেওয়া।
  4. অন্যকে প্ররোচিত করা কর্মবিরতিতে অংশ নিতে।

● শাস্তির ধরন:

  1. বরখাস্ত
  2. অব্যাহতি
  3. পদাবনতি বা বেতন কর্তন

সরকারি উদ্যোগ

চলমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গতকাল একটি স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যার উদ্দেশ্য হলো—সরকারি কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া যাচাই করে সুপারিশ প্রদান।

সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলা আনার নামে ঘোষিত এই অধ্যাদেশ সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। সচিবালয়ের বিক্ষোভে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এখন দেখার বিষয়, সরকার আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজে কিনা, নাকি বিক্ষোভ আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করে।

Leave a Reply