
হজ এজেন্সির জন্য সৌদি সরকারের চার নির্দেশনা
সৌদি আরব সরকার ২০২৫ সালের পবিত্র হজ উপলক্ষে হজ এজেন্সিগুলোর জন্য চারটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করেছে, যা হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ করতে ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনাগুলো শনিবার চিঠির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোর কাছে পাঠিয়েছে।
১. তথ্য সঠিকভাবে প্রদান ও প্রস্তুতি
প্রথম নির্দেশনায় সৌদি সরকার হজযাত্রীদের তথ্য যথাযথভাবে নুসুক মাসার ও ই-হজ সিস্টেমে আপলোডের উপর জোর দিয়েছে। এটি হজ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে বিমানবন্দর থেকে যাত্রীদের রিসিভ করা ও নির্ধারিত আবাসনে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তুতি আগেই সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে। এটি যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।
২. নুসুক আইডি বাধ্যতামূলক
দ্বিতীয় নির্দেশনায় প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য নুসুক আইডি কার্ড পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই আইডি কার্ড ছাড়া পবিত্র স্থানসমূহে প্রবেশ করা যাবে না। এটি নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু প্রবেশব্যবস্থার অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
৩. অভিজ্ঞ গাইডের ব্যবস্থা
তৃতীয় নির্দেশনায় প্রতিটি দলের সঙ্গে অভিজ্ঞ গাইড রাখার কথা বলা হয়েছে, যাদের মক্কা ও মদিনার পথঘাট সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা রয়েছে। এটি পথভ্রান্তি ও যাত্রী হয়রানি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
৪. জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থা
চতুর্থ নির্দেশনায় ২৪ ঘণ্টা হেল্পলাইন নম্বর ১৯৬৬ চালু থাকার কথা বলা হয়েছে, যা যেকোনো সমস্যা, অভিযোগ বা প্রশ্নের দ্রুত সমাধান নিশ্চিত করতে সহায়ক।
বাংলাদেশের হজ পরিস্থিতি: অগ্রগতি ও বাস্তবচিত্র
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অফিসের তথ্যানুসারে, ২৫ মে সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৫০টি হজ ফ্লাইটে বাংলাদেশ থেকে ইতোমধ্যে ৫৮,০৪০ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭,১০০ জন হজ পালনে যাচ্ছেন, যার মধ্যে ৫,২০০ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় ও ৮১,৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছেন।
হজ ফ্লাইট পরিচালনায় তিনটি এয়ারলাইন্স যুক্ত রয়েছে:
- বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স: ৭৮টি ফ্লাইট
- সৌদি এয়ারলাইন্স: ৫১টি ফ্লাইট
- ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স: ২১টি ফ্লাইট
এই তথ্যগুলো থেকে বোঝা যায়, সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো হজ ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
উদ্বেগজনক দিক: ৯ জন হজযাত্রীর মৃত্যু
হজযাত্রা শুরুর পর এখন পর্যন্ত (২৫ মে পর্যন্ত) ৯ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী সৌদি আরবে মৃত্যুবরণ করেছেন। এটি স্বাভাবিকভাবে উদ্বেগের বিষয় হলেও, বড় পরিসরে বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে হজের মতো শারীরিকভাবে demanding (কঠিন) কর্মসূচিতে উচ্চবয়সী ও অসুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। তা সত্ত্বেও, এ বিষয়ে আরো সচেতনতা ও স্বাস্থ্যপরীক্ষা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।
সমাপনী মন্তব্য
সৌদি সরকারের নতুন নির্দেশনা ও বাংলাদেশের প্রস্তুতি একত্রে হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও কার্যকর, নিরাপদ ও প্রযুক্তিনির্ভর করার দিকেই এগিয়ে নিচ্ছে। তথ্য ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ও সেবার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে এসব নির্দেশনার বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। একই সঙ্গে হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা ও সহায়তা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করা সময়ের দাবি।