
সড়কে ইশরাক সমর্থকদের উল্লাস, ২ উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ নিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের পর বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের পক্ষে চলমান আন্দোলন একটি নতুন মোড় নিয়েছে। আদালতের রায় ইশরাকের পক্ষে গেলেও আন্দোলন থেমে থাকেনি, বরং নতুন রাজনৈতিক দাবিতে এটি আরও বিস্তৃত হয়েছে।
১. উচ্চ আদালতের রায় ও এর তাৎপর্য
উচ্চ আদালত নির্বাচন কমিশনের গেজেট স্থগিত চেয়ে করা রিট খারিজ করে দেন, যা কার্যত ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে বৈধতা দেয়ার দিকে অগ্রসর একটি পদক্ষেপ। বিএনপি নেতাকর্মীরা একে ‘প্রাথমিক বিজয়’ হিসেবে উদযাপন করেন।
২. জনসমর্থন ও রাস্তার রাজনীতি
রায়ের পর রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে সমর্থকদের অবস্থান এবং বৃষ্টির মধ্যেও স্লোগান—এটি একটি প্রতীকী দৃশ্য। এটি বোঝায়, আন্দোলন শুধু রাজনৈতিক অভিপ্রায় নয়, বরং নেতার প্রতি এক ধরনের আবেগী আনুগত্যও রয়েছে। তবে এই জনসমাবেশের ফলে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে, যা নাগরিক জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
৩. নতুন দাবি: উপদেষ্টাদের পদত্যাগ
আন্দোলন এখন আর শুধু ইশরাকের দায়িত্ব বুঝে পাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এখন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা—আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (স্থানীয় সরকার) এবং মাহফুজ আলম (তথ্য)—এর পদত্যাগের দাবিও উঠেছে। আন্দোলনকারীদের মতে, তাদের উপস্থিতি সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এই দাবি থেকে স্পষ্ট, বিএনপির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন ও কাঠামো নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
৪. রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও সাংগঠনিক বার্তা
ইশরাক হোসেন নিজে আন্দোলনস্থলে এসে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছেন, যা তাঁর সাংগঠনিক সক্রিয়তা ও আন্দোলনের প্রতি ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতাকে সামনে আনে। তিনি যে রাত পর্যন্ত অবস্থান করেছেন, তা তার নেতৃস্থানীয় ভূমিকা এবং কর্মীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে।
৫. রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব
এই আন্দোলন সরকারের ওপর একটি চাপে পরিণত হতে পারে, বিশেষ করে যখন এটি অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন বা উপদেষ্টাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করে। এর ফলে সরকারের পক্ষ থেকে হয়তো রাজনৈতিক যোগাযোগ বা ব্যাখ্যার প্রয়োজন পড়বে। একই সঙ্গে, সড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি প্রশাসনিক হস্তক্ষেপেরও সম্ভাবনা তৈরি করে।
ইশরাক হোসেনকে ঘিরে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেবল একজন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার বিষয় নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক অনাস্থা ও দাবির প্রতিফলন। আদালতের রায় আন্দোলনকারীদের সাহস জুগিয়েছে, তবে নতুন দাবির মাধ্যমে আন্দোলন আরও রাজনৈতিক রূপ নিচ্ছে। ভবিষ্যতে এই আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি সরকারের প্রতিক্রিয়া ও ইশরাকের ভূমিকার ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে।