
ঢাবি ছাত্র সাম্য হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদলের মশাল মিছিল, উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল শুরু করে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা তুলে ধরে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান এবং প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদের পদত্যাগ দাবি করে।
ছাত্রদলের বক্তব্য ও দাবি:
সমাবেশে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন:
“সাম্য হত্যার ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও উপাচার্য ও প্রক্টর কিছুই জানেন না—এটা দুঃখজনক। আমরা ছয় দিন ধরে সহিষ্ণু আচরণ করছি, কিন্তু এখনো হত্যাকারীদের শনাক্ত করা যায়নি। এটা উদ্বেগজনক।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন:
“সাম্য ছিল জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা। এখন হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে একটি ভিন্ন ন্যারেটিভ দাঁড় করানো হচ্ছে, যা প্রশাসনের পক্ষে যাচ্ছে। এই মিথ্যা বয়ান যারা তৈরি করছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন:
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান অনিক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন শাওন প্রমুখ।
সাম্য হত্যাকাণ্ড: সংক্ষিপ্ত বিবরণ
গত ১৩ মে, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য নিহত হন। পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদক্ষেপ:
সোমবারই উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান ঘটনাস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন করেন। সঙ্গে ছিলেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ, সহকারী প্রক্টর, প্রক্টরিয়াল টিম এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
উপাচার্য বলেন:
“নিরাপত্তা জোরদারে ইতোমধ্যে ২০টি সিসিটিভি ক্যামেরা ও কিছু বাতি লাগানো হয়েছে। পুলিশের টহলও চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমরা এলাকাটি নিয়মিত তদারক করছি এবং সবার সহযোগিতা কামনা করছি।”
ঢাবি ছাত্র সাম্য হত্যাকাণ্ড এবং তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা ও শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ উভয়কেই সামনে নিয়ে এসেছে। মশাল মিছিল ও পদত্যাগ দাবি প্রমাণ করে যে, শিক্ষার্থীরা কেবল বিচারের দাবি করছেন না, বরং নিরাপত্তার নিশ্চয়তাও চাইছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত ও নিরাপত্তা উদ্যোগ থাকলেও, বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর পদক্ষেপ এখন অত্যন্ত জরুরি।