
গণতন্ত্র ফেরানোর একমাত্র উপায় নিরপেক্ষ নির্বাচন: মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান জাতীয়তাবাদী বাউল দলের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বক্তৃতা প্রদান করেন, যেখানে তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি চায় না, বরং দেশের সব গণতন্ত্রকামী শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চায়। তিনি বর্তমান সরকার তথা আওয়ামী লীগকে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার অভিযোগে অভিযুক্ত করেন এবং জনগণকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।
গণতন্ত্র ও নির্বাচনের প্রসঙ্গ:
ড. মঈন খানের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, বিএনপি বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার সমাধান হিসেবে একটি “সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন”কে একমাত্র পথ হিসেবে তুলে ধরছে। তার মতে, জনগণ বর্তমানে তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত এবং তারা অধিকার প্রয়োগের জন্য উন্মুখ। এটি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির গণতন্ত্রপন্থী অবস্থান প্রতিফলিত করে, যদিও বিরোধীদল হিসেবে এটি কৌশলগত বক্তব্যও হতে পারে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের ব্যবহার:
তিনি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি সংগ্রাম হিসেবে উল্লেখ করেন। এই ইতিহাসকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে টেনে এনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একদলীয় শাসনের অভিযোগ তোলেন, যেখানে বাকশাল ও ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ ইস্যু সামনে আনেন। এটি বিএনপির রাজনৈতিক কৌশলের অংশ, যেখানে আওয়ামী লীগকে গণতন্ত্রবিরোধী হিসেবে উপস্থাপন করে নিজেদের অবস্থানকে ন্যায্য ও জনসমর্থিত হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করা হয়।
আন্দোলনের প্রেক্ষাপট:
তিনি বলেন, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটে। এটি হয়তো রাজনৈতিক ভাষায় সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস বা রাজনৈতিক চাপে প্রশাসনের অকার্যকর অবস্থানকে বোঝাতে বলা হয়েছে। তিনি এখান থেকে রাজনৈতিক ঐক্যের বার্তা দেন এবং সবাইকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ড. মঈন খানের বক্তব্য একটি কৌশলগত রাজনৈতিক বার্তা, যা বর্তমান সরকারকে একদলীয় শাসনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। তিনি ইতিহাস, জনমানস ও নির্বাচনকে একত্র করে একটি জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন, যেখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি কেন্দ্রীয় বিষয়। যদিও এটি বিরোধী দলের সাধারণ রাজনৈতিক অবস্থান, তবুও এর মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক চিত্র কেমন হতে পারে তার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
এটি একটি স্পষ্ট বার্তা যে, বিএনপি এখন নির্বাচনী রাজনীতিকেই প্রধান কৌশল হিসেবে গ্রহণ করছে এবং তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটি বিস্তৃত সামাজিক ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।