July 19, 2025
ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চে বাধা

ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চে বাধা

মে ১৭, ২০২৫

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে তার অনুসারীরা লংমার্চ কর্মসূচি পালন করেন। যদিও আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী তিনি বৈধভাবে নির্বাচিত মেয়র, তবুও এখনো তাকে শপথ গ্রহণ করানো হয়নি। এর প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চের আয়োজন করলেও গুলিস্তানে পুলিশি বাধার মুখে তারা ফিরে যেতে বাধ্য হন।

১. আইনি ও সাংবিধানিক প্রেক্ষাপট:

  • ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র হিসেবে ঘোষণা করেন।
  • ২২ এপ্রিল আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) উদ্যোগ নেয় এবং ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে।
  • ১৩ মে ইসি জানায়, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে না।

অর্থাৎ আইন ও প্রশাসনিকভাবে ইশরাক হোসেনের মেয়র হওয়ার পথে আর কোনো আইনি বাধা নেই।

২. প্রশাসনিক গড়িমসি ও টালবাহানা:

  • আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের দাবি, মন্ত্রণালয়ের মতামত না নিয়েই ইসি গেজেট প্রকাশ করেছে।
  • স্থানীয় সরকার বিভাগও দ্রুত আইনি অবস্থান জানতে চায়।
  • কিন্তু এরপরও শপথ অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ হয়নি।

এটি স্পষ্ট করে যে, প্রশাসনের একাংশের ভেতরে রাজনৈতিক প্রভাব ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব বিদ্যমান, যা মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণে বিলম্ব সৃষ্টি করছে।

৩. জনরোষ ও নাগরিক দুর্ভোগ:

  • আন্দোলনকারীদের মতে, মেয়র না থাকার কারণে শহরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, মশক নিধন কার্যক্রম, নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
  • হাজারো সাধারণ নাগরিক ও ডিএসসিসির কর্মচারীরাও আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে নগর ভবন অবরুদ্ধ করেন।

এটি বোঝায় যে, জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক হতাশা তৈরি হয়েছে এবং তারা পরিবর্তনের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

রাজনৈতিক দিক:

ইশরাক হোসেন বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে তার দায়িত্ব গ্রহণে অনীহা থাকতে পারে। অতীতে নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক ও ট্রাইব্যুনালের রায় কার্যকর করতে বিলম্ব সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি করে।

এটি দেশের গণতান্ত্রিক ও নির্বাচন পরবর্তী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।

সম্ভাব্য পরিণতি:

  • যদি শিগগিরই ইশরাক হোসেনকে শপথ নিতে না দেওয়া হয়, তবে বৃহত্তর আন্দোলন বা রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা রয়েছে।
  • স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনের ওপর জনআস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
  • বিরোধীদল এই ইস্যুকে জাতীয় আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।

ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ বিলম্বিত হওয়া শুধুমাত্র একটি প্রশাসনিক জটিলতা নয়, বরং এটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, আইন-আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা, এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিনিধিত্ব নিয়ে একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুষ্ঠু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে এ ধরনের পরিস্থিতি গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসেবে রয়ে যেতে পারে।

Leave a Reply