
ফারাক্কা বাঁধ এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে — বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারতের গঙ্গা নদীর ফারাক্কা পয়েন্টে নির্মিত বাঁধ এখন বাংলাদেশের জন্য একটি ‘মরণফাঁদ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঐতিহাসিক ‘ফারাক্কা দিবস’ উপলক্ষে বুধবার (১৫ মে) গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন,
“ভারত গঙ্গা নদীর ফারাক্কা পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণ করে অভিন্ন নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহার শুরু করে, যার ফলে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল প্রায় মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।”
পরিবেশ বিপর্যয় ও সরকারকে দায়ী করলেন বিএনপি মহাসচিব
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ফারাক্কা বাঁধের কারণে পানিসংকট, প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা, জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। তিনি বলেন,
“তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে ভারতকে পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর অনুমতি দেয়। অথচ সেই বাঁধ এখনো চালু রয়েছে এবং তা ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।”
ফারাক্কা দিবসের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন
বিএনপি মহাসচিব মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন,
“৪৯ বছর আগে ভাসানীর ডাকে লাখো মানুষ ফারাক্কা অভিমুখে লংমার্চে অংশ নেয়। তিনি পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, তৎকালীন আওয়ামী সরকারের কারণেই বাংলাদেশের জনগণ আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য পানি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সেই বঞ্চনার পরিণতিতে আজ দেশের উত্তরাঞ্চলে চাষাবাদ হুমকির মুখে, নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় তীব্রতর হচ্ছে।
৫৪টি অভিন্ন নদীতে বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি
মির্জা ফখরুল বলেন,
“ভারত আজও আন্তর্জাতিক আইন ও কনভেনশন উপেক্ষা করে একের পর এক বাঁধ নির্মাণ করে যাচ্ছে। ৫৪টি অভিন্ন নদীর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে একতরফা পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে, যা বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।”
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই অবস্থার স্থায়ীত্ব বাংলাদেশের ভূপ্রাকৃতিক কাঠামোকে মারাত্মক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে, বাংলাদেশ দিন দিন নিষ্ফলা ঊষর ভূমিতে পরিণত হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিবের মতে, ফারাক্কা দিবস আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। এটি শুধু অতীতের একটি আন্দোলনের স্মারক নয়, বরং আজকের বাস্তবতায় নদী রক্ষা ও পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের সংগ্রামে নতুন করে সক্রিয় হওয়ার ডাক।