July 19, 2025
ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক মেরূকরণ দৃশ্যপটে

ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক মেরূকরণ দৃশ্যপটে

মে ১৫, ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ড ঘিরে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছে ছাত্রদল ও বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলো। অন্যদিকে, কিছু সংগঠন প্রশাসনের পক্ষ নিয়েছে, ফলে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

ছাত্রদলের প্রতিবাদ ও অবস্থান কর্মসূচি

  • সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঢামেকে জড়ো হয়ে মিছিল করে উপাচার্যের বাসভবনে যায়।
  • সেখানে উপাচার্য বের হয়ে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হন এবং উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বলেন, “তোরা আমাকে মেরে ফেল।”
  • পরে উপাচার্যকে সঙ্গে নিয়ে সাম্য হত্যাস্থলে যান ছাত্রদল নেতারা।
  • রাত ৩টায় আরেকটি মিছিল থেকে ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি জানানো হয়।
  • আজ বৃহস্পতিবার ছাত্রদল ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছে।

বামপন্থি সংগঠনের অবস্থান

  • সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নও উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছে।
  • তাদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার ব্যর্থতায় বারবার হত্যাকাণ্ড ঘটছে।

বিভক্ত ছাত্ররাজনীতি ও ভিসিকে ঘিরে মতবিরোধ

  • ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগুলো উপাচার্যকে ‘জামায়াতপন্থি’ বলে দাবি করছে এবং মনে করছে, তাঁর নেতৃত্বে ডাকসু নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।
  • ইসলামী ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বি.ছা.আ) এবং বিডিএসসি ভিসির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তাদের মতে, প্রশাসনে পরিবর্তন ডাকসু নির্বাচনকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলবে।

অন্য সংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক

  • শিবির ও বিডিএসসি প্রকাশ্যে ভিসির পক্ষে-বিপক্ষে কিছু বলেনি, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রদলের দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
  • জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা ভিসির সাহসী ভূমিকাকে প্রশংসা করেছেন।
  • গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বিডিএসসি) ছয় দফা দাবি দিয়ে ভিসিকে স্মারকলিপি দিয়েছে।

রাজনৈতিক পটভূমি ও পূর্ববর্তী বিতর্ক

  • উপাচার্যের নিয়োগের পর বিএনপি অভিযোগ করে, ঢাবিতে জামাতিকরণ চলছে।
  • বিগত মাসগুলোতে খুলনা ও বরিশালের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিএনপিপন্থি উপাচার্যদের সরিয়েছে সরকার।
  • ছাত্রদল বলছে, ঢাবিতে ছয় মাসে দুজন খুন, তাই উপাচার্যের পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই।

সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও বিকল্প মতামত

  • কিছু সংগঠক ও শিক্ষার্থী বলছে, সাম্য হত্যার দায় প্রশাসনের নয়, বরং এটি শহরের অপরাধ ও মাদকের প্রভাব।
  • উদ্যান এলাকাকে মাদকমুক্ত করা ও স্থায়ী গেট বসানোর দাবি তুলেছেন ছাত্রনেতা এবি জুবায়ের।

শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি ও সমর্থন দুই পক্ষের মধ্যে ক্যাম্পাসে স্পষ্ট বিভাজন তৈরি করেছে। হত্যাকাণ্ডের বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে।

Leave a Reply