July 8, 2025
একাত্তরের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে ঐক্যের আহ্বান এনসিপির 

একাত্তরের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে ঐক্যের আহ্বান এনসিপির 

মে ১২, ২০২৫

২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের পর ছাত্রদের হাত ধরে গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এক বিবৃতিতে বলেছে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি ও গণহত্যায় সহযোগিতাকারীদের নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্টভাবে জাতির সামনে ব্যাখ্যা করা উচিত। এতে করে জাতীয় ঐক্য সুসংহত হবে এবং অভ্যুত্থানে উঠে আসা জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব সালেহ উদ্দীন সিফাত স্বাক্ষরিত ‘সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিতর্কে এনসিপির অবস্থান’ শীর্ষক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।

বিবৃতির মূল বক্তব্যসমূহ:

  • যারা অতীতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থানে ছিলেন, তাদের উচিত জনগণের কাছে জবাবদিহি করা এবং বর্তমানে জাতীয় ঐক্য গঠনে ভূমিকা রাখা।
  • বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশের জনগণের মধ্যকার বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমেই কেবল মুজিববাদকে সামগ্রিকভাবে পরাস্ত করা সম্ভব।”
  • পূর্বেকার বিভাজন ও আদর্শগত অবস্থানের জন্য কেউ দায়ী থাকলে, তাকে তা স্পষ্ট করে জাতীয় ঐক্যের পথে অগ্রসর হতে হবে।

সম্প্রতি বিতর্ক ও মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্ট:

এনসিপির উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টে বলেন,

“একাত্তরের প্রশ্ন মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে… জুলাইয়ের শক্তির মধ্যে ঢুকে স্যাবোটাজ করা বন্ধ করতে হবে।”

পোস্টে মুজিববাদী বামদের ‘গুম-খুন ও শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞের নেপথ্য শক্তি’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এর পরপরই সামাজিক মাধ্যমে তার ছাত্রজীবনের পুরনো ছবি ছড়িয়ে পড়ে, যেগুলোকে ‘শিবির সংশ্লিষ্ট’ দাবি করে সমালোচনা শুরু হয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় মাহফুজ আলম পরে ওই পোস্ট সরিয়ে নেন, তবে ততক্ষণে স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়। এক পাল্টা পোস্টে তিনি কড়া ভাষায় সমালোচকদের উদ্দেশে ‘লাস্ট ওয়ার্নিং’ দেন।

জাতীয় সংগীত ও বিতর্কিত স্লোগান নিয়ে এনসিপির অবস্থান:

সাম্প্রতিক সময়ে এনসিপির অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে গোলাম আজমের নামে স্লোগান ও জাতীয় সংগীতে বাধা দেওয়ার ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এনসিপি দাবি করেছে, এসব স্লোগান তাদের দলীয় অবস্থান নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়:

  • “আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কোনো এনসিপি সদস্য কখনোই দলীয় বা ইতিহাসবিরোধী স্লোগান দেয়নি।”
  • “স্লোগান বা আচরণ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন থাকলে, তার দায় সংশ্লিষ্ট পক্ষের।”
  • এনসিপির ভাষায়, তাদের স্লোগান ও বক্তৃতায় ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ২০২৪—এই তিনটি ঐতিহাসিক অধ্যায়ের প্রতিফলন ছিল।

রাজনীতির পূর্বশর্ত হিসেবে ঐতিহাসিক স্বীকৃতি দাবি:

বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়, বাংলাদেশে রাজনীতি করার পূর্বশর্ত হলো ১৯৪৭ সালের দেশভাগ, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের যথাযথ স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রদান।
যারা অতীতে ইতিহাসবিরোধী ভূমিকা রেখেছেন, তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয় যেন তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জাতীয় সমঝোতা ও ঐক্য গঠনে সহায়ক হন।

Leave a Reply