
সীমান্ত উত্তেজনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আইপিএল স্থগিত
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) অনির্দিষ্টকালের জন্য আইপিএল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ ও আইপিএলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বোর্ডের একটি সূত্র। খবর প্রকাশ করেছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন,
“জাতীয় স্বার্থ আমাদের কাছে সবকিছুর ঊর্ধ্বে। তাই আইপিএল এখন বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী সময় উপযুক্ত পরিস্থিতিতে টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলো আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ঘটনার পটভূমি:
- পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের কাছাকাছি ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) স্থগিত করা হয় এবং পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেওয়া হয়।
- পাল্টা জবাবে পাকিস্তান জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে হামলা চালায়, যার ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে পাঞ্জাব ও দিল্লির ম্যাচগুলো স্থগিত করা হয়।
- পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষাপটে আইপিএল কর্তৃপক্ষ সতর্ক অবস্থানে যায়।
বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়:
- বিসিসিআই আইপিএল আবার শুরু করার সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে সীমান্ত থেকে দূরে নিরাপদ শহরগুলো কিংবা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলার আয়োজনের কথা ভাবছে।
- ধর্মশালার ম্যাচ পরিত্যক্ত করা হলেও সেখানে থাকা ক্রিকেটার, স্টাফ এবং সম্প্রচারকর্মীরা এখনো পুরোপুরি নিরাপদে ফিরে যেতে পারেননি।
- চন্ডীগড় বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় আকাশপথে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। হেলিকপ্টার ব্যবহারেরও সুযোগ নেই, কারণ আকাশপথে রয়েছে রেড অ্যালার্ট ও সাইরেন সতর্কতা।
ক্রিকেটারদের সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা:
- ধর্মশালা থেকে সড়কপথে ৮৫ কিমি দূরে পাঠানকোট রেলস্টেশনে নিয়ে যাওয়া হবে ক্রিকেটারদের।
- সেখান থেকে বিশেষ ট্রেনে দিল্লি পৌঁছে দেওয়া হবে।
- নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রিকেটার জানিয়েছেন, “দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, বিশেষ করে বিদেশি ক্রিকেটাররা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।”
- ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে, তারা চাইলে তাদের ক্রিকেটারদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত।
এই স্থগিতাদেশ শুধুমাত্র একটি ক্রীড়া আসরের বিলম্ব নয়, বরং এটি সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও ক্রীড়াঙ্গনের ওপর এর প্রভাবের বহিঃপ্রকাশ। বিসিসিআই ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে—নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কীভাবে এই জনপ্রিয় টুর্নামেন্ট পুনরায় শুরু করা যায়, তা নির্ধারণ করা।