July 7, 2025
শহীদের প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেওয়া হবে: শাহবাজ শরিফ

শহীদের প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেওয়া হবে: শাহবাজ শরিফ

ভারতের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানে ৩১ জন নিহত৫৭ জন আহত হওয়ার ঘটনায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে উপমহাদেশে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, বেসামরিক নাগরিকদের রক্তপাতের বদলা নেওয়া হবে। তাঁর ভাষায়,

“আমরা আমাদের নিরপরাধ শহীদদের প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেব।”

গত ২২ এপ্রিল, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই পর্যটক। ভারত ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে। জবাবে পাকিস্তান অভিযোগ অস্বীকার করে এবং আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রস্তাব দেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভারতের সেনাবাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের ছয়টি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ভারত দাবি করে, ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালানো হয়েছে। তবে পাকিস্তান বলছে, মসজিদ, স্কুল ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে হামলা হয়েছে।

দুই দেশের পাল্টাপাল্টি দাবি:

  • পাকিস্তান জানায়, হামলায় বিলাল, সুবহান আল্লাহ ও আব্বাস মসজিদ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বেসামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
  • পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের তিনটি রাফাল, এক মিগ-২৯, এক সু-৩০ যুদ্ধবিমান ও একটি সামরিক ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
  • অন্যদিকে, পাকিস্তান কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারতের সেনা ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করে।
  • ভারতের দাবি, পাকিস্তানি গোলায় ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৩ জন আহত হয়েছেন। এক ভারতীয় সেনাও প্রাণ হারিয়েছেন।

প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া:

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন,

“ভারতকে বিমান হামলার পরিণতি ভোগ করতে হবে। আমরা শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়ব।”

তিনি জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকে সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ অনুমোদন দেন পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন,

“সীমান্তের ওপার থেকে আরও হামলা প্রতিহত করা এবং সন্ত্রাসবাদী কাঠামো ধ্বংসই ছিল অপারেশনের মূল লক্ষ্য।”

ভারতের সেনাবাহিনী দাবি করে, সীমান্তের ভেতরে ঢুকে লস্কর-ই-তাইয়েবা, জইশ-ই-মুহাম্মদ ও হিজবুল মুজাহিদিনের প্রশিক্ষণকেন্দ্র ধ্বংস করা হয়েছে।

আকাশসীমা বন্ধ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:

  • হামলার পর পাকিস্তান ও ভারতের উত্তরাঞ্চলের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
  • আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলো ভারতের উত্তরের আকাশসীমা এড়িয়ে চলতে শুরু করে।
  • দুই দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটও বিঘ্নিত হয়।

দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে এমন সামরিক উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানালেও ঘটনার গতিপ্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে, ভবিষ্যতে সংঘাত আরও তীব্র হতে পারে।

Leave a Reply