
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে দেওয়ার সুপারিশ
সবার জন্য বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ, রেফারাল ব্যবস্থা চালু এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন। কমিশনের প্রধান অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেছেন, এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন বর্তমান বাজেটের মধ্যেই সম্ভব।
আজ সোমবার (৫ মে) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন কমিশনপ্রধান। এর আগে সকাল ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের প্রধান সুপারিশসমূহ:
🔹 স্বতন্ত্র ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সার্ভিস’ গঠন
বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের পরিবর্তে একটি স্বতন্ত্র স্বাস্থ্য কাঠামো গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (স্বাস্থ্য) গঠন এবং জনবল কাঠামো পুনর্গঠন করার সুপারিশ করা হয়েছে।
🔹 ক্যারিয়ার প্ল্যানিং ও পদোন্নতি
স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে লাইন প্রমোশনের উপযোগী পদসোপান তৈরি, এবং ‘সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিসে’ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রবেশের সুযোগ রাখার প্রস্তাব।
🔹 স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সেবা বিভাগ পৃথককরণ
চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একাডেমিক ও সার্ভিস হাসপাতাল হিসেবে ভাগ করে স্বতন্ত্র ব্যবস্থাপনা কাঠামোর অধীনে পরিচালনার প্রস্তাব।
🔹 জনবল নিয়োগ ও উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ
নতুন প্রতিষ্ঠান খোলার আগে দক্ষ জনবল নিয়োগ নিশ্চিতকরণ, এবং ডিজিটাল হাজিরা ও সরেজমিন তদারকির মাধ্যমে উপস্থিতি নিশ্চিতের সুপারিশ।
🔹 সরকারি হাসপাতালের বাজেট বরাদ্দ ও দালাল দমন
শয্যা সংখ্যার ভিত্তিতে নয়, রোগীর সংখ্যা অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ, এবং দালাল নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব।
🔹 স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন ও রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ
চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীর অধিকার ও দায়িত্ব ভারসাম্য রেখে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং ল্যাবরেটরি মান নিয়ন্ত্রণে রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ।
🔹 ফিজিওথেরাপি বিভাগ ও পদ সৃষ্টি
সব সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিশেষায়িত হাসপাতাল ও জেলা-উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ফিজিওথেরাপি বিভাগ ও ফিজিওথেরাপিস্ট পদ সৃষ্টির প্রস্তাব।
🔹 কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিচালনা
গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে নির্দিষ্ট শর্তে পরিচালনা আউটসোর্সিং, এবং সরকারি বাজেট বরাদ্দের সুপারিশ।
🔹 বেসরকারি হাসপাতালের সেবামূল্য নির্ধারণ
অস্বচ্ছল ২০ শতাংশ রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বেসরকারি হাসপাতালের ফি নির্ধারণ করার প্রস্তাব।