
আসুন, সাংবাদিকের সুরক্ষার জন্য একত্রিত হই: তারেক রহমান
তারেক রহমানের বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যটি বাংলাদেশের বর্তমান গণমাধ্যম পরিস্থিতি, সাংবাদিকদের ভূমিকা ও তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক ও নৈতিক বার্তা বহন করে। নিচে এর বিশ্লেষণমূলক বিবরণ দেওয়া হলো:
১. প্রেক্ষাপট ও উপলক্ষ:
তারেক রহমান তার বক্তব্যটি দিয়েছেন ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে। এ দিবসটি বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকতার স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উদযাপিত হয়। এ প্রেক্ষাপটে, তিনি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি কার্টুন শেয়ার করে তাঁর বক্তব্য প্রকাশ করেন।
২. সাংবাদিকদের প্রতি সম্মান ও সুরক্ষার আহ্বান:
তিনি সাংবাদিকদের “গণতন্ত্রের স্তম্ভ” হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, তাঁদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। তিনি বলেন, সেন্সরশিপ ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করা অনুচিত এবং তা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।
৩. বর্তমান ও অতীত শাসন ব্যবস্থার সমালোচনা:
তারেক রহমান বক্তব্যে ইঙ্গিত করেন যে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ের “ক্ষমতাচ্যুত কর্তৃত্ববাদী শাসন” সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা দমন করেছে। এর ফলে গণমাধ্যমের নিয়মতান্ত্রিক অবক্ষয় ঘটেছে। যদিও সরাসরি কারো নাম উল্লেখ করেননি, তবে স্পষ্টতই বর্তমান বা সদ্যপ্রাক্তন সরকারের প্রতি তাঁর এই সমালোচনা।
৪. সাহসী সাংবাদিকতার প্রশংসা:
তিনি অতীতের কিছু সাহসী সাংবাদিকের কথা উল্লেখ করেন, যারা দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা নিয়ে প্রতিবেদন করেছেন। এই সাংবাদিকদের ভূমিকাকে তিনি গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে তুলে ধরেন এবং তাঁদের সংগ্রামকে স্বীকৃতি দেন।
৫. বিএনপির অবস্থান ও নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি:
তারেক রহমান দাবি করেন, বিএনপি এমন সাংবাদিকতাকে সমর্থন করে যা সত্য, নৈতিকতা ও সততার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়—এমনকি তা দলের অবস্থানের বিপরীত হলেও। এর মাধ্যমে তিনি একটি মুক্ত ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যমের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন বলে দাবি করেন।
৬. রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও ভবিষ্যত আকাঙ্ক্ষা:
বক্তব্যের শেষাংশে তিনি এমন একটি রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানান যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সবার জন্য সমভাবে প্রযোজ্য হবে। এটি তাঁর দলের রাজনৈতিক দর্শনের অংশ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে।
তারেক রহমানের এই বক্তব্য একটি রাজনৈতিক বার্তার চেয়েও বেশি কিছু—এটি বাংলাদেশের সাংবাদিকতা, গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে এক ধরনের প্রতিশ্রুতি ও আহ্বান। একই সঙ্গে এটি বর্তমান (বা সদ্যপ্রাক্তন) শাসন ব্যবস্থার প্রতি একটি পরোক্ষ সমালোচনা এবং ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রচিন্তার একটি রূপরেখা।