
টানা আট রাত ভারত-পাকিস্তান সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি
কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ফের ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতের এই ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি, তবে সীমান্ত পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
টানা অষ্টম রাতের সংঘর্ষ
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান সেনাবাহিনী টানা অষ্টম রাতেও বিনা উসকানিতে কাশ্মীর সীমান্তে গুলি চালিয়েছে। ছোট অস্ত্র দিয়ে চালানো এই গুলির লক্ষ্য ছিল:
- কুপওয়ারা
- বারামুলা
- পুঞ্চ
- নওশেরা
- আখনুর
এই এলাকাগুলোর ভারতীয় চৌকিগুলোর ওপর লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীও ৭৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তজুড়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া অনুপস্থিত
ঘটনার পরেও পাকিস্তান সরকার কিংবা দেশটির সংবাদমাধ্যম থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া বা বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ভারতীয় পক্ষের দাবি, পাকিস্তানই প্রতিবার উসকানিমূলকভাবে গুলি ছুড়ছে।
পেহেলগাম হামলা: উত্তেজনার সূচনা
বর্তমান উত্তেজনার মূল পটভূমি তৈরি হয়েছে ২২ এপ্রিল পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার ঘটনার পর। কাশ্মীরের বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামক একটি সংগঠন, যাকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়। এটি ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি
এই ঘটনার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক দ্রুত অবনতি ঘটে। দু’দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে:
- ভারত সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে।
- জবাবে পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিত ও আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয়।
- উভয় দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একে অপরের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।
টানা আট রাতের সীমান্ত সংঘর্ষ, ভয়াবহ পর্যটক হত্যাকাণ্ড, ও কূটনৈতিক চুক্তি স্থগিত—সব মিলিয়ে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নতুন করে সংকটময় হয়ে উঠেছে। সীমান্তে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ বের করাই এখন দুই প্রতিবেশী দেশের জন্য সবচেয়ে জরুরি চ্যালেঞ্জ।